আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। দাবি পূরণ না হলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন। তিনি বলেন, ‘১৫ দিনের মধ্যে তারা পদত্যাগ না করলে গণ-অভ্যুত্থানের সকল শক্তিকে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। প্রয়োজনে যমুনা ঘেরাও করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে রাশেদ খাঁন বলেন, ‘উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ইসলামি শক্তিকে সহ্য করতে পারছেন না। আলেম-ওলামা মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নিয়ে তিনি কটাক্ষ করেছেন। মাহফুজ আলম জাতীয় ঐক্য সংহতি পুরোপুরি ধ্বংস করেছেন। তিনি একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। এ রকম বিতর্কিত ব্যক্তি কোনোভাবেই সরকারের উপদেষ্টা পদে বহাল থাকতে পারেন না। আমরা তাঁর পদত্যাগ দাবি করছি।’
গণঅধিকার পরিষদের এ নেতা বলেন, ‘তথ্য উপদেষ্টা সরকারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে। তবে তিনি (উপদেষ্টা মাহফুজ আলম) কখনো হেফাজত, কখনো জামায়াত, বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন। এসব বক্তব্যের কারণে অনৈক্য সৃষ্টি হচ্ছে। প্রয়োজনে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের মুখপাত্র ও সহসভাপতি ফারুক হাসান। তিনি বলেন, ‘যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকারের ৩ জন ছাত্র উপদেষ্টা ছিল, তাঁদের একজন পদত্যাগ করে একটি দলের প্রধান হয়েছেন। সে ক্ষেত্রে বাকিরাও সরকারে থাকার নৈতিকতা হারিয়েছেন। আর দল গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় কি পদত্যাগকৃত উপদেষ্টা সম্পৃক্ত ছিলেন না? অবশ্যই ছিলেন। আর ৩ জন ছাত্র উপদেষ্টার একই নেক্সাস।’
ফারুক আরও বলেন, ‘আমরা সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে বাকি ২ জন ছাত্র উপদেষ্টারও পদত্যাগ দাবি করছি। এ ছাড়া ছাত্ররা যেহেতু দল গঠন করেছে, এ ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী বা সমন্বয়কের কোনো অস্তিত্ব বিদ্যমান নেই বলে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে সরকারের সব সেক্টর ও দপ্তর থেকে ছাত্র প্রতিনিধিদের পদত্যাগ করা অতীব জরুরি।’
উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের আহ্বান জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘এই লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্গঠন জরুরি। যেহেতু এই উপদেষ্টা পরিষদে বিতর্কিত ব্যক্তিরা রয়েছে। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হওয়া জরুরি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক শাকিলউজ্জামান ও গণমাধ্যম সম্পাদক আবু হানিফ।