হোম > রাজনীতি

ডাকসুতে উপাচার্যের ক্ষমতা কমানোর প্রস্তাব শিবিরের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩: ৫২
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে শাখা ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

চলতি জানুয়ারি মাসের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রশিবির শাখা। একই সঙ্গে উপাচার্যের ক্ষমতা হ্রাস, গঠনতন্ত্র সংস্কারের ৯ প্রস্তাব এবং নারী ও ধর্মবিষয়ক পদ তৈরির প্রস্তাবও দিয়েছে সংগঠনটি।

আজ সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে এক সংবাদ সম্মেলনে শাখা সভাপতি এস এম ফরহাদ ও সেক্রেটারি মহিউদ্দিন খান এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন।

ফরহাদ বলেন, ‘সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে যৌক্তিক সংস্কারগুলো নিশ্চিত করে জানুয়ারির মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে বোধ হয় এটিই প্রথম, যেখানে গণরুম-গেস্টরুমের মতো বাজে সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়েছে। সেই পুরোনো সংস্কৃতি ফিরে আসুক, তা চাই না। যদি ডাকসু নির্বাচন পেছাতে থাকে, তাহলে পুরোনো সংস্কৃতি ফিরে আসতে পারে। নিয়মিত ডাকসু নির্বাচন হলে ছাত্রনেতারা শিক্ষার্থীদের কথা শুনতে বাধ্য হবেন।

ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে কি না, এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ বলেন, ‘ডাকসু একটি প্রতিযোগিতামূলক জায়গা, এটিকে দ্বন্দ্ব হিসেবে উপস্থাপন করতে চাই না। ডাকসু নির্বাচন নিয়মিত হলে কোনো সংগঠন আগ বাড়িয়ে সংঘাতে জড়াবে না। কারণ আগ বাড়িয়ে যাঁরা সংঘাতে জড়াবেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের ভোট দেবে না।’

শিবিরের প্রস্তাবনায় কী আছে
বিদ্যমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উপাচার্য পদাধিকারবলে ডাকসুর সভাপতি মনোনীত হন। তিনি সব সভা, নির্বাহী কমিটি, অন্যান্য কমিটি ও উপকমিটির সভা নিশ্চিত করেন। সংসদ পরিচালনা, জরুরি অবস্থা, অচলাবস্থা বা নিয়ম ভঙ্গের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, কমিটির সদস্যকে বহিষ্কার, সম্পূর্ণ কমিটি বাতিল বা নতুন নির্বাচন আহ্বানসহ একাধিক ক্ষমতা তাঁকে দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রশিবির বলছে, অনির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও সভাপতিকে যে অসীম ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। প্রস্তাবনায় তারা (শিবির) সভাপতি পদটিকে আলংকারিক পদ করার প্রস্তাব করেছে, যেখানে সভাপতির কোনো ধরনের নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে না।

ডাকসুতে বর্তমানে ১৪টি সম্পাদক পদ রয়েছে। এর মধ্যে কমন রুম ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক পদকে আলাদা করে ‘পাঠাগার, পাঠকক্ষ ও কমনরুমবিষয়ক সম্পাদক’ এবং ‘ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যানটিনবিষয়ক সম্পাদক’, ‘সাহিত্য সম্পাদক’ ও ‘সংস্কৃতি সম্পাদক’ পদকে একীভূত করে ‘সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া ‘নারী ও সমতাবিষয়ক সম্পাদক’, ‘ধর্ম ও সম্প্রীতিবিষয়ক সম্পাদক’ নামে নতুন পদ তৈরির প্রস্তাব করেছে ছাত্রশিবির।

নতুন দুই পদ প্রস্তাবের বিষয়ে ফরহাদ বলেন, ‘সব কটি হলের মধ্যে ধর্মীয় উপাসনালয় রয়েছে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধর্মের শিক্ষার্থীরা আছেন, তাঁদের মধ্যকার আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি এবং ধর্মের সত্যিকারের অধিকার সংরক্ষণ হচ্ছে কি না, তা দেখতে এ পদ তৈরির আহ্বান করেছি।’

মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব
স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক পদ পরিবর্তন করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক পদ চালুর প্রস্তাব করেছে ছাত্রশিবির। প্রস্তাবনার মূল্যায়নে সংগঠনটি বলছে, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদী বয়ানের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে ২০১৯ সালের সংশোধনীতে বিধি ৫-এর ঙ ধারায় শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শন ও আদর্শ প্রচার ও বাস্তবায়নের এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আদর্শ বাঙালি জাতীয়তাবাদের উল্লেখ রেখে পদটি সংযোজন করা হয়। নতুন পদটিতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের স্পিরিটকে ধারণ করে দেশের সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা, মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, পারস্পরিক সম্প্রীতি ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।

শিবির আরও প্রস্তাব করেছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। এ ছাড়াও গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের ক্ষমতা সিন্ডিকেট সভার বদৌলতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে দেওয়া, যেকোনো অ্যাজেন্ডা আলোচনার পর সভাপতির অনুমতি নেওয়ার ‘বাধ্যবাধকতা’ প্রত্যাহার করার প্রস্তাব দেয় শিবির।

ভোটের চাপ সবদিকে

নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশের অবস্থার উন্নতি হবে না: বরকত উল্লাহ বুলু

খালেদা জিয়া আগের চেয়ে ভালো আছেন

নাইকো দুর্নীতি মামলায় আরও ৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

সেকশন