স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ছেলের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে ঢাকায় বিএনপি নেতার ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে রাহাত মালিকের নির্দেশে ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘শুধু পুলিশ ও আইন আদালত দিয়েই নয়, সরকার প্রশাসন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দিয়ে বিরোধী দলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এমনকি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানও বন্ধ করে দিচ্ছে। ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সেবামূলক স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেড—স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে রাহাত মালিকের নির্দেশে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’
দখলের উদ্দেশ্য সেবামূলক এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘এই দীর্ঘ সময়ে এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কেউ অনিয়মের অভিযোগ তুলতে পারেনি। স্বল্প খরচে আধুনিক চিকিৎসা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সুনাম অর্জন করেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে শুধু দখলের উদ্দেশ্যেই কোনো প্রকার কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে প্রতিষ্ঠানটি তালা মেরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’
জানা গেছে, ২০ সেপ্টেম্বর চলমান অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট লিমিটেড ও ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারটি বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গতকাল রোববার সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) সংবাদ সম্মেলনে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার আবুল খায়ের অভিযোগ করেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে রাহাত মালেকের নির্দেশেই তাঁর প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। কারণ, তিনি এই প্রতিষ্ঠান কিনতে চেয়েছিলেন, সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানই বন্ধ করিয়েছেন।
সরকার ‘মরণকামড়’ দেওয়া শুরু করেছে মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘দেশব্যাপী চলছে মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তারের হিড়িক। হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা অব্যাহত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, আদালত, বিচারক সবাইকে প্রধানমন্ত্রীর তল্পিবাহকে পরিণত করা হয়েছে।’
এ সময় তিনি গত ২৮ ও ২৯ জুলাই থেকে আজ পর্যন্ত বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারা দেশের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তারের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, ওই সময়ের মধ্যে সরকারদলীয় নেতা-কর্মী ও পুলিশের হামলায় বিএনপির ১ হাজার ৫৪০ জন আহত হয়েছেন।
এ সময়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে ৩৩৫টি মামলা করা হয়েছে। যাতে ১৪ হাজার ৩৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১ হাজার ৯৯৫ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে।