প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ জাদুকর আখ্যা দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ জাদুকর হলো শেখ হাসিনা। তিনি পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রাতের আঁধারে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সবকিছুকে উল্টে দিলেন। ঠিক একইভাবে তিনি বলতেছেন, চন্দ্রিমা উদ্যানে নাকি জিয়াউর রহমানের শবদেহ নেই। উনি জানবেন কী করে এ বিষয়? যারা জিয়াউর রহমানের লাশ রিসিভ করেছিল সেই পুলিশ মিলিটারিরা এখনো বেঁচে আছে। যিনি পোস্টমর্টেম করেছিলেন সেই ডা. তোফায়েল এখনো বেঁচে আছেন। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে তাঁর (জিয়ার) লাশ আনার পর দেশের সবচেয়ে বড় জনসমাগম হয়েছিল।
আজ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণসংহতি আন্দোলন ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলা আয়োজিত দলের ১৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, হঠাৎ এসব তথ্য আপনি কেন আনছেন? এটা অনেকাংশে মস্তিষ্ক বিকৃতির লক্ষ্মণ। মানসিকভাবে আপনার ওপর এত চাপ, এত অত্যাচার! আপনার বিশ্রাম প্রয়োজন। আপনার চিকিৎসা প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু ও জিয়াউর রহমানকে টানাটানি না করে তাঁদের শান্তিতে ঘুমাতে দেন।
ডা. জাফরুল্লাহ আরও বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। কারণ হঠাৎ তাঁর জ্ঞান চক্ষু খুলে গেছে। তিনি সাহসের সঙ্গে, সততার সঙ্গে আজকে নিজের দলের দিকে তাকাতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর বাড়ি আক্রান্ত হলে তিনি তাঁর দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ফোন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আপনি তো বললেন না, তিনি (বঙ্গবন্ধু) জিয়াউর রহমানকে কেন ফোন করলেন না, তিনি জেনারেল ওসমানীকে কেন ফোন করেননি? খালেদ মোশাররফকে কেন ফোন করেননি? সবচেয়ে বড় কথা যারা তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে স্বাধীনতা এনেছিলেন তিনি তাঁদেরকে কেন ফোন করেননি?
তিনি আরও বলেন, রক্ষী বাহিনীর কারণে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীরা, পাকিস্তান থেকে আগত সৈনিকেরা তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। এই সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বঙ্গবন্ধুর বিপরীতে গেছে। তাঁর এই বিপদে যারা দাঁড়াতে পারত, দাঁড়াত, তাঁদের তিনি ডাকেন নাই।
এ সময় সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাঁরা জানেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়নি। সত্যি হচ্ছে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা সেরকম ভাবে মানুষের সামনে আবির্ভূত হতে পেরেছেন। আর বাকিরা যারা সত্তরের নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন তাঁদের অর্ধেকের বেশি এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি।
‘দুর্নীতি-লুটপাট-ফ্যাসিবাদের দুষ্টচক্র উচ্ছেদ করো, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে এক হও’-এই এ ডাকে এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর সমন্বয়কারী মনির উদ্দীন পাপ্পু। আর সঞ্চালনা করেন সংগঠনের ঢাকা মহানগরের সদস্য প্রবীর সাহা।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন-বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু প্রমুখ।