কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের জোট সাদা দল। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন ‘জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী’ এই শিক্ষকেরা।
লিখিত বক্তব্যে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘কোটা সংস্কারের জন্য বৈষম্যবিরোধী চলমান ছাত্র আন্দোলনটি ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস, মানুষের ভোটাধিকার হরণ, বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করে একটি কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করে বর্তমান সরকার দেশের গণমানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে একটি শ্রেণি বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছে। অন্যদিকে দেশের সিংহভাগ মানুষের দৈনন্দিন জীবন-যাপন কেবল কষ্টকরই নয়, প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে মানুষের মনে যে দ্রোহের সঞ্চার হয়েছে, এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এবারের স্বতঃস্ফূর্ত গণ-আন্দোলনে।’
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, ‘আমরা অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলন মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে সরকার যড়যন্ত্রতত্ত্ব, তৃতীয় পক্ষের ইন্দন ইত্যাদি বয়ান তৈরি করে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা মনে করি, একটি কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা জণগণের সাংবিধানিক অধিকার। এর মধ্যে ষড়যন্ত্রতত্ত্বের অবতারণার কোনো অবকাশ নেই। আর এই অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনকারীদের স্বাধীনতাবিরোধী ও ষড়যন্ত্রকারী আখ্যা দেওয়া সরকারের অগণতান্ত্রিক ও চরম স্বৈরাচারী মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ। ছাত্রসমাজের ন্যায্য আন্দোলনসহ কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আমাদের কেবল সমর্থনই নয়, সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকবে। এই আন্দোলনে শামিল হওয়ার জন্য দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতার প্রতি আমাদের আহ্বান রইল।’
নিজেরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অংশ হয়েও কীভাবে পদত্যাগের দাবি করছেন, তা জানতে চাইলে সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর এবং যেসব হলের প্রাধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের পদত্যাগ দাবি করছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই ধরনের দাবিনামা—৯ দফা, নাকি ৮ দফা—নিয়ে অবস্থান জানতে চাইলে অধ্যাপক লুৎফর বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব দাবির সঙ্গে আমরা একাত্মতা পোষণ করছি। হোক সেটা ৮ দফা কিংবা ৯ দফা।’
সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম, সাবেক আহ্বায়ক এ বি এম ওবায়দুল ইসলামসহ সাদা দলের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।
১১ দফা দাবির মধ্যে আছে—