নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ বাজার সিন্ডিকেট ভাঙা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাম্রাজ্যবাদবিরোধী অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় নির্বাচনী ইশতেহার উপস্থাপন করেন দলের পলিটব্যুরো সদস্য নূর আহমেদ বকুল।
নির্বাচনী ইশতেহারে—দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন দমন; দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ; রাজনৈতিক লক্ষ্য, বৈষম্য নিরসন আইন প্রণয়ন, শোষণ মুক্তির লক্ষ্যে আইন ও বিধি প্রণয়ন; সামাজিক ক্ষমতায়ন; আদিবাসী, সংখ্যালঘু ও নগরের প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন; নারীর ক্ষমতায়ন; শিশু-কিশোর অধিকার; শিক্ষার অধিকার; স্বাস্থ্যসেবা; কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তা; শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান; শ্রম অধিকার ও সর্বনিম্ন মজুরি; শ্রম অভিবাসন ও প্রবাসীকল্যাণ; বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি; জ্বালানি ও খনিজ; জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষা; নদী ও পাহাড় সংরক্ষণ; সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা ও নিরাপদ সড়ক; রোহিঙ্গা সমস্যা; প্রতিরক্ষা; পররাষ্ট্র; আঞ্চলিক জোট; ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন; ন্যাটোর সম্প্রসারণে বিরোধিতা; সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা বিষয়ে ১৪৪টি উপদফায় বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
ইশতেহার ঘোষণার আগে নূর আহমেদ বকুল বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি তার নিজস্ব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সার্বিকভাবে দেশ পরিচালনার একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেশবাসীর কাছে উপস্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, ‘সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে এই ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা নির্বাচন করছি ১৪ দলগতভাবে এবং পাশাপাশি এবারের নির্বাচনের বিশেষ বৈশিষ্ট্যে আমরা আলাদাভাবেও প্রার্থী দিয়েছি।’
ইশতেহারের কিছু বিশেষ দিক তুলে ধরে বকুল বলেন, সবচেয়ে দরিদ্র উপজেলায় কর্মসংস্থান স্কিম চালু, আইনি সুরক্ষাসহ জাতীয় ন্যূনতম মজুরির মানদণ্ড নির্ধারণ, পরিকল্পিত ব্লু ইকোনমি, কোচিং ও নোট ব্যবসা বন্ধ, আদিবাসীদের মাতৃভাষায় শিক্ষা, পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইনে নারীর প্রতি যে বৈষম্য রয়েছে তা দূর করে ‘ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড’ এবং বাজার ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে ফড়িয়া প্রথা ও মজুতদারি রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিএনপিসহ বিরোধীদের নির্বাচন বর্জনের আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কোনো সাম্প্রদায়িক ধারা বাংলাদেশে আর ফিরতে দেওয়া উচিত নয়, উচিত হবে না। সাংবিধানিক ধারায় একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতির চলমান প্রবাহকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক ও পলিটব্যুরোর সদস্য মাহমুদুল হাসান মানিক, কামরুল আহসান, আনিসুর রহমান মল্লিক, এনামুল হক এমরান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শরীফ সামসীর, তপন দত্ত প্রমুখ।