নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দিনাজপুর ও জয়পুরহাটে নারী ফুটবল ম্যাচে সাম্প্রদায়িক মবের হামলায় নিন্দা জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন। সংগঠনটি বলছে, সাম্প্রদায়িক মব নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ অন্তর্বর্তী সরকারকে দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
আজ বুধবার বিকেলে ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মাঈন আহমেদ প্রেরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাগীব নাঈম ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২৮ জানুয়ারি দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বাওনা এলাকায় ও জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় নারী ফুটবল ম্যাচ বন্ধ করতে তৌহিদী জনতার ব্যানারে একদল সংঘবদ্ধ মব হামলা ও ভাঙচুর চালায়। হামলায় উভয় স্থানেই নারীদের ফুটবল ম্যাচ ভণ্ডুল ও ছয়জন আহত হয়েছে। দুই জেলায় নারীদের ফুটবল খেলার আয়োজন বন্ধে যে আক্রমণ তা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, বরং ফ্যাসিস্ট মনোভাবাপন্ন সাম্প্রদায়িক শক্তির পরিকল্পিত হামলা।
তাঁরা বলেন, এ ধরনের আক্রমণ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্তর্ভুক্তিমূলক আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী ও নারীবিদ্বেষী পুরুষতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের দুরভিসন্ধি। যেখানে বাংলাদেশের নারী খেলোয়াড়রা দুইবার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী হয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে গর্বিত করেছে, সেখানে নারীদের পৃষ্ঠপোষকতা না করে তাঁদের আয়োজনে হামলা চালানো, তাঁদের মনোবল ভেঙে দেওয়া ও পুরুষতান্ত্রিক কর্তৃত্বের ভয়ের সংস্কৃতি তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, যা নতজানু হয়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকার।
নেতারা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের সরকার এসব ফ্যাসিস্ট সাম্প্রদায়িক মব নিয়ন্ত্রণে নীরব ভূমিকা পালন করে তাদের কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করেছে। গণ-অভ্যুত্থানের পর সারা দেশে শতাধিক মাজার ভাঙা ও লুটপাট, নারীদের ওপর আক্রমণ ও মোরাল পুলিশিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সরকারকে এসব কাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় নাই। এসব মবের আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুর পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হলেও সরকার এই সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিস্ট শক্তিকে নিউট্রলাইজ করার ক্ষেত্রে নীরব থেকে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকার মুখে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপের আলাপ করলেও তাদের কাজে তার প্রমাণ দেখা যায়নি বরং তা প্রশ্রয় দিতে অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রীয় কাঠামো ব্যবহার করছে।
হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। একই সঙ্গে সারা দেশে নারীদের খেলাধুলার আয়োজন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সরকারকে আরও তৎপর ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে তারা।