বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিনা যুদ্ধেই জয়লাভ করা যাবে, তবে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক শক্তি, সাহস, আস্থা ও মনোবল অটুট থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে শ্রমিক দলের উদ্যোগে ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে দেশের গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল ও শক্তিসমূহ অঙ্গীকার করেছে। এই অঙ্গীকারের প্রতি দেশ ও জনগণের কথা মাথায় রেখে আস্থা, বিশ্বাস এবং মনোবল ঠিক রাখা গেলে সরকারের বিরুদ্ধে বিনা যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করতে পারব।’
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকালবেলায়ও সৈনিকেরা জানত না একটু পরে পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা জানত না এরশাদকে পদত্যাগ করতে হবে। আজকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নিচের দিকের নেতা-কর্মীদের আস্ফালন দেখে মনে হচ্ছে তারাও জানেন না তাদের নেত্রী কখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মতো আত্মসমর্পণ করে এরশাদের মতো পদত্যাগ করবেন।’
এই সরকারের জন্য দেশ চালানো কঠিন হয়ে গেছে উল্লেখ করে গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য বড় শক্তি অর্থনৈতিক ম্যানেজমেন্ট। এর মধ্যে দেখা গেছে ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা নেই। শেয়ার মার্কেট থেকে প্রায় ৯০ লাখ কোটি টাকা নাই। এভাবে অর্থনৈতিক অবস্থা শূন্য হয়ে গেছে। আগে তো তলাবিহীন ঝুড়ি ছিল, এখন হয়তো দেখা যাবে তলা আছে ঝুড়ি নেই। সুতরাং এই অবস্থার মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালনা করা খুব কষ্টের।’
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম প্রয়োজনে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান। তিনি আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বলেন, ‘আন্দোলনের ভয়ে নেতা-কর্মীদের জেলে ভরে দিচ্ছেন। তাতে কি আমরা ভয় পাই? আমরা ভয় পাই না। এবার কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে রাজপথে নামা হবে। আমাদের কবরের কাছাকাছি নিয়ে গেছেন। অনেককে কবরেও পাঠিয়ে দিয়েছেন। যারা কবরে গেছে তাদেরও শান্তি নাই। তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দিচ্ছেন। তাই শান্তি আনার জন্য একটা যুদ্ধ করতে হবে।’
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির খানসহ শ্রমিক দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা।