বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, স্বাধীনতা হাইজ্যাক করে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল একটি দল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনকে ইঙ্গিত করে তিনি এ কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছিল। চর দখলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে দখল, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও আধিপত্যবাদী বজায় রাখতে ক্যাম্পাসগুলোকে অস্ত্রাগারে পরিণত করেছিল। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই ব্যবস্থার কবর রচনা হয়েছে। বাংলাদেশে আর কোনো চাঁদাবাজ, আধিপত্যবাদ ও দখলবাজের স্থান হবে না, ইনশা আল্লাহ।’
জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী দুঃশাসনে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ, বিশেষ করে ছাত্র ও যুবসমাজ কোনো দুঃশাসন মেনে নেয় না—সেটা চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে প্রমাণিত হয়েছে। স্বাধীনতার সাফল্য হাইজ্যাক করে একটা রাজনৈতিক দল দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল। কিন্তু ছাত্রসমাজ ১৫ বছরের মাথায় তাদের সেই দুঃশাসনকে পরাজিত করে নতুন বাংলাদেশের শুভসূচনা করেছে। বাংলাদেশে আর কোনো আধিপত্যবাদ ও দুঃশাসন এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না।’
শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ৮ আগস্ট (৫ তারিখ গুলিবিদ্ধ) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী রায়হানের পিতা মো. মুসলেহ উদ্দিন।
এ সময় শহীদ আবু সাঈদ, ফয়সাল শান্ত, ওয়াসিম, উসমানসহ শহীদ পরিবারের সদস্য, আওয়ামী সরকারের আমলে অত্যাচারে আহত ও গুম হওয়া শিবিরের নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন—জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
এ ছাড়া, আরও বক্তব্য রাখেন—মুফতি কাজী ইবরাহীম, তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার প্রাক্তন অধ্যক্ষ মাওলানা যায়নুল আবেদীন, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শামছুল আলম, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ড. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণঅধিকার পরিষদের (রেজা কিবরিয়া) ফারুক হাসান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম প্রমুখ।
বিদেশি অতিথিদের মধ্য ছিলেন—আনাদোলু গেঞ্জলিক দেরনেইয়ের সহসভাপতি এমরুল্লাহ ডেমির, পেরসাতুয়ান কেবাংসান পেলাযার ইসলাম মালয়েশিয়ার সভাপতি জুল আইমান, হিকমত ইয়ুথ মিশরের সভাপতি ড. আবদুল্লাহ আহমেদ, ইসলামী বিশ্ব যুব ফোরামের সভাপতি ড. আশরাফ আওয়াদ, আংকাতান বেলিয়া ইসলাম মালয়েশিয়ার সভাপতি আহমদ ফাহমি মোহাম্মদ সামসুদিন।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, মাওলানা শামসুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, জাগপা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলন (ববি হাজ্জাজ) সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েল এবং ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও নেতা-কর্মীরা।