নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান গোলাপ, তাঁর স্ত্রী গুলশান আরা মিয়া, ছেলে ইভান সোবহান মিয়া ও মেয়ে আনিশা গোলাপ মিয়ার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।
একই আদালত সাবেক রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম, তাঁর স্ত্রীর সাঈদা হাকিম ও ছেলে আশিক মাহমুদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয় বলে দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান।
আবদুস সোবহান গোলাপ ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা সম্পদ ক্রোকের তালিকায় রয়েছে মিরপুরের একটি পাঁচতলা বাড়ি। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি স্থাবর সম্পদ। এর মধ্যে ৮টি হচ্ছে সিঙ্গেল রেসিডেনশিয়াল কন্ডো ইউনিট। আরেকটি হচ্ছে ডুয়েল ফ্যামিলি ইউনিট।
এর বাইরে আবদুস সোবহান গোলাপ, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের নামে থাকা ৫৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিদেশে এসব সম্পদ গড়ে তুলেছেন আবদুস সোবহান গোলাপ, তাঁর স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা।
এসব সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দিয়ে দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন। অন্যদিকে তাঁদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ না করলে হিসাবে থাকা অর্থ বেহাত হতে পারে।
এর আগে গত ২ অক্টোবর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচার, বাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। আবদুস সোবহান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। গত বছরের ২৫ আগস্ট গোলাপ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
জিল্লুল হাকিম ও তাঁর পরিবার
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম, তাঁর স্ত্রীর সাঈদা হাকিম ও ছেলে আশিক মাহমুদের ব্যাংক হিসাবে জমা আছে ১৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা। বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে সাবেক রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদক এসব অভিযোগ অনুসন্ধান করছে। জিল্লুল হাকিমের ১৯টি ব্যাংক হিসাবে বর্তমানে জমা রয়েছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। অন্যদিকে তাঁর স্ত্রী সাঈদা হাকিমের ৬টি ব্যাংক হিসাবে জমা আছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া তাঁর ছেলে আশিক মাহমুদের একটি ব্যাংক হিসাবে জমা আছে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, দুদক বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ব্যাংকে গচ্ছিত এসব অর্থ তাঁরা হস্তান্তর, স্থানান্তর এবং উত্তোলনের চেষ্টা করছেন। ব্যাংকে গচ্ছিত এসব অর্থ অবরুদ্ধের নির্দেশ না দিলে রাষ্ট্রের অপূরণীয় ক্ষতি হবে এবং তদন্ত ও অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হবে।