জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘৭১ ও ২৪ আলাদা কিছু নয়, বরং ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একাত্তরের চেতনা পুনরুজ্জীবিত হয়েছে।’
আজ বুধবার স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর পর বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘একাত্তরে আমরা যা চেয়েছিলাম, সেটা ৫৪ বছরেও অর্জিত হতে পারে নাই বিধায় একটা ফ্যাসিজম ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে চেপে বসেছিল। গণ-অভ্যুত্থানের প্রয়োজন হয়েছিল। একাত্তরে যে সাম্যের কথা বলা হয়েছিল চব্বিশে কিন্তু সেই বৈষম্যহীন সমাজের কথাই আমরা বলেছি। ফলে যারা এটা পরস্পরবিরোধী বা মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাইছে, তাদের উদ্দেশ্য অসৎ।’
নির্বাচন নিয়ে নাহিদ বলেছেন, ‘সংস্কার ও বিচারবিহীন যদি নির্বাচন দেওয়া হয় এবং কোনো একটি দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য যদি নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া হয়, সংস্কার ও বিচার ছাড়া; তাহলে তা অবশ্যই মেনে নেওয়া হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, পুরোনো সংবিধান এবং পুরোনো বন্দোবস্তহীন ব্যবস্থা আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের সংগ্রাম, সাতচল্লিশের আজাদির লড়াই—এই সবকিছুর মধ্য দিয়ে আমরা যে স্বাধীন, সার্বভৌম, মানবিক মর্যাদাসম্পন্ন রাষ্ট্র পেতে চেয়েছিলাম, তার একটি সুযোগ ও সম্ভাবনা আমাদের গণ-অভ্যুত্থানের পরে তৈরি হয়েছে। আমরা কেবল ক্ষমতার লোভে, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সেই সব সম্ভাবনাকে যেন নষ্ট করে না দিই।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য একধরনের নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিচার ও সংস্কারকে পাশ কাটিয়ে। অন্যদিকে ফ্যাসিস্ট শক্তির পুনর্বাসনের জন্য নানা ধরনের পাঁয়তারা চলছে। আমরা মনে করি, এই সবকিছুকেই প্রতিহত করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
আগামী দিনের প্রত্যাশা জানাতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘শহীদদের আজকে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি, শহীদদের রক্তের বিনিময়েই আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছিলাম। এই বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, ন্যায়বিচার ও অধিকারের জন্য সেই উপনিবেশবিরোধী সংগ্রাম থেকে আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রাম এবং এর ধারাবাহিকতায় ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান।’
এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়কারী নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারীসহ অন্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।