নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই আয় বৈষম্য পরিমাপের সূচক ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। আসন্ন বাজেটও সাধারণের সঙ্গে ধনিক-লুটেরা শ্রেণির আয় বৈষম্যসহ নানাবিধ বৈষম্যের সূচককে আরও বেগবান করবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
আজ রোববার দুপুরে পুরানা পল্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসন্ন জাতীয় বাজেট উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান দলের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ।
এম এম আকাশ বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে অনুপার্জিত আয় এবং শোষণকে নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে সকল ক্ষেত্রে শুধু আকাশচুম্বী বৈষম্যই সৃষ্টি হয়নি, এই বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে যুগপৎ অনুপার্জিত আয় এবং শোষণ প্রক্রিয়াকে ক্রমাগত তীব্র থেকে তীব্রতর করার মাধ্যমে। তাই এবারের বাজেট সর্বমুখী বৈষম্য বৃদ্ধির ধারাকেই আরও বেগবান করবে।’
শহরাঞ্চলে বৈষম্য সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৈষম্য শুধু আয়ের ক্ষেত্রে সত্য নয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জনগণের অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক অন্যান্য অধিকারের সব ক্ষেত্রেই সত্য।
মুক্তিযুদ্ধের ধারার অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বাজেট প্রণয়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অতীতের গণবিরোধী ধারায় বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার পুঁজিবাদী তথা নয়া-উদারনীতি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মোড়কে গত বছরের বাজেট উপস্থাপন করেছে। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।
আকাশ বলেন, বকেয়া সংস্কার না করা, লুটেরাদের কাছে ক্রমাগত আত্মসমর্পণ, বিদেশি তাৎক্ষণিক নির্দেশের কাছে আটকে পড়া, আয়-ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকারের প্রচণ্ড দুর্নীতি ও অদক্ষতা, কোভিড–পরবর্তী বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ আবহাওয়ার অনিশ্চয়তা, জলবায়ু সংকট ইত্যাদি। সবকিছু মিলিয়ে বর্তমান সংকটের মুখে সরকারের ত্রিশংকু অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এখনই জরুরিভাবে প্রতিষেধক ব্যবস্থা না নিতে পারলে পরিণতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, কোষাধ্যক্ষ ডা. ফজলুর রহমান প্রমুখ।