Ajker Patrika
হোম > রাজনীতি

জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দর্শন উপহার দিয়েছেন জিয়াউর রহমান: মেজর হাফিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দর্শন উপহার দিয়েছেন জিয়াউর রহমান: মেজর হাফিজ

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ বলেছেন, ‘বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদ নামে একটি রাজনৈতিক দর্শন উপহার দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। ছয় বছর রাষ্ট্র পরিচালনার পর দেখা গেল তাঁর একটু জমি নেই, ব্যাংকে টাকা নেই। তাঁর স্ত্রী-পুত্র, পরিবারকে তিনি যেভাবে লালন-পালন করেছেন, সেরকম উদাহরণ খোলাফায়ে রাশেদীনের পর মুসলিম বিশ্বে আর দেখা যায়নি। তিনি একজন দেশপ্রেমিক নেতা ছিলেন।’ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে শাহ্জী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন রচিত সাতটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

মেজর হাফিজ বলেছেন, ‘তিনি একমাত্র রাষ্ট্রপতি, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন জনপদে সাধারণ মানুষ যাঁর কাছাকাছি যেতে পেরেছেন। যিনি সরাসরি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন, করমর্দন করেছেন। এটি উপমহাদেশের রাজনীতিতে আগে কখনো দেখা যায়নি।’ 

জিয়াউর রহমানকে কাছ থেকে দেখেছেন উল্লেখ করে মেজর হাফিজ বলেন, ‘পাকিস্তান মিলিটারি প্রশিক্ষণ একাডেমিতে তিনি আমার প্রশিক্ষক ছিলেন। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে তিনি আমার সিনিয়র কর্মকর্তা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি আমার ব্রিগেড কমান্ডার ছিলেন। যুদ্ধের একপর্যায়ে সিলেটের কানাইঘাট জয় করার পর আমরা ধীরে ধীরে সিলেটের দিকে অগ্রসর হই। সে সময় কানাইঘাট থেকে সিলেট পর্যন্ত একটি লংমার্চ আমরা করেছিলাম। আপনারা মাও সেতুংয়ের লংমার্চের কথা শুনেছেন। দীর্ঘ সময় সেখানে লেগেছিল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত লগ্নে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে এই এক সপ্তাহব্যাপী লংমার্চ আমাদের জাতীয় জীবনের ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এ সময় আমরা সিলেট শহর দখল করার জন্য যুদ্ধক্ষেত্র এড়িয়ে, খাবার-দাবার অস্ত্রশস্ত্র পিঠে নিয়ে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বারো শ সৈনিক চা-বাগান ও হাওরের মধ্য দিয়ে সিলেটের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম। এই লংমার্চের সময় আমরা সারা রাত হাঁটতাম আর দিনের বেলায় জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতাম।’ 

মেজর হাফিজ আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের একটি স্কেচ ম্যাপ ছিল ৮ ফিট বাই ৮ ফিট। সেটার ওপর একটি পলিথিন কাভার ছিল। দিনের বেলা যখন সূর্য ওঠে ওঠে, তখন এই ম্যাপ বিছিয়ে জিয়াউর রহমান, ক্যাপ্টেন অলি আহমদ ও আমি ঘুমাতাম। চোখ খুলে যখন আমার পাশে নিদ্রারত আমার ব্রিগেড কমান্ডার জিয়াউর রহমানকে দেখতাম, তখন কখনো কল্পনাও করিনি আমার পাশের এই ব্যক্তিটি মাত্র চার বছরের মধ্যে দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত হবেন। আল্লাহ তাআলা সেটা ঠিক করে দিয়েছেন। বাংলাদেশের জনগণ তাঁকে সেই পজিশনে নিয়েছেন।’ 

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের এই সহকর্মী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি কখনো কোনো পদের জন্য লালায়িত ছিলেন না। আমি দেড় বছর তাঁর একান্ত সচিব ছিলাম। তাঁর সর্বোচ্চ স্বপ্ন ছিল তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান হবেন। তাঁর কখনো রাজনৈতিক অভিলাষ ছিল না। কিন্তু এ দেশের মানুষের প্রয়োজনে জনগণই তাঁকে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসিয়েছে। জিয়াউর রহমানের মতো সৎ ব্যক্তি বাংলাদেশের ইতিহাসে সৃষ্টি হয়নি।’

সে সময়কার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মেজর হাফিজ বলেন, ‘বাংলাদেশ বড় না ছোট, পারমাণবিক অস্ত্র আছে কি না, সেই চিন্তাভাবনা তাঁর মাথায় ছিল না। তিনি ভেবেছেন, এই ব্যর্থ জনপদে তিনিই নেতা, তাঁকে জনগণ রাষ্ট্রপতি বানিয়েছে দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য। এ জন্যই ভারত যখন পদ্মার পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করেছে, তিনি কোনো দেন-দরবার না করে সরাসরি জাতিসংঘে গিয়ে প্রতিবাদ করেছেন, যার ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় মিটিংয়ে বসতে ভারত বাধ্য হয়েছে। ১৯৭৭ সালে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টনের যে চুক্তি হয়েছে, সেটি হলো আজ পর্যন্ত সম্পাদিত কয়েকটি চুক্তির মধ্যে সর্বোত্তম চুক্তি, যেখানে বাংলাদেশের প্রাপ্য পানি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশের স্বার্থ তিনি কোনো দিন বিসর্জন দেননি।’ 

জিয়াউর রহমান জীবিত থাকা অবস্থায় কোনো দিন কাউকে ছোট করে কথা বলেননি উল্লেখ করে মেজর হাফিজ বলেন, ‘তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু বলে সম্বোধন করে কথা বলেছেন। তাঁর প্রশংসা করে তিনি লিখেছেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। তার পরও তাঁর রেহাই নাই। কেন তিনি সেই ঘোষণা দিলেন! যে ঘোষণা রাজনৈতিক গোষ্ঠী দিতে পারেনি, সেটি দিয়ে তিনি শাসকগোষ্ঠীর বিরাগভাজন হয়েছেন।’

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা আরও বলেন, ‘সুসজ্জিত মঞ্চে বক্তব্য দেওয়া খুবই সহজ। যখন কামান ও মেশিনগানের গোলা আপনার দিকে ধেয়ে আসবে, সেটির সামনে বুক পেতে দিয়ে দেশের জন্য নিজেকে বিসর্জন দিতে কতজন রাজনৈতিক নেতা আছেন? কিন্তু তিনি নিজের কথা ভাবেননি। তিনি ভেবেছেন, এই মুহূর্তে দেশের মানুষকে রক্ষা করা তাঁদের পবিত্র দাবি। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন।’ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক মন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, সাবেক মন্ত্রী এহসানুল হক মিলনসহ আরও অনেকে।

শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও দোসরেরা নানা ষড়যন্ত্র করছে: এ্যানী

হাসিনার বিচারের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক নাই: আমীর খসরু

‘শিবির’ ট্যাগ দিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কমিটিতে না রাখার অভিযোগ

খালেদা জিয়া আগের চেয়ে ভালো আছেন

আওয়ামী লীগের বিচার বিএনপি চায়, তবে নির্বাচন পিছিয়ে নয়: মির্জা আব্বাস

সামনে গণপরিষদ ও সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে করা যেতে পারে: নাহিদ ইসলাম

যত দিন হাসিনাকে ফাঁসির মঞ্চে না দেখছি, তত দিন কেউ যেন নির্বাচনের কথা না বলে: সারজিস

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

নতুন প্রজাতন্ত্র গড়তে নতুন সংবিধান প্রয়োজন: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করল এনসিপি