হোম > রাজনীতি

একাত্তরে আপনারা কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন, জামায়াতকে রিজভীর প্রশ্ন

সিলেট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ১৬
আজ বৃহস্পতিবার সিলেট নগরের হ‌ুমায়ূন রশীদ চত্বরে এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘একটা রাজনৈতিক দল আমি দেখলাম, এটি আমাকে বিস্মিত করেছে যে দেশপ্রেমী তারা আর সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী দেশপ্রেমিক নিঃসন্দেহে। কারণ, তাদের পূর্বসূরিরা এই বাংলাদেশ নির্মাণে জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছে, তারাই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছে। দেখেছি জনগণ যখন অত্যাচারিত হয়েছে, সেনাবাহিনী তাদের পক্ষ নিয়েছে। এমনকি ২৪ এর যে গণ-অভ্যুত্থান, সেখানেও একটি উচ্ছল ভূমিকা রেখেছে। আমি সেই রাজনৈতিক দলকে বলতে চাই, ইসলামপন্থী সেই রাজনৈতিক দল যে আপনাদের একাত্তরের ভূমিকা কী ছিল, আপনারা কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন, আপনারা কোনো সেক্টর কমান্ডারের আন্ডারে যুদ্ধ করেছেন, বাংলাদেশ কেউ দেশপ্রেমিক নেই? শুধু একটি রাজনৈতিক দল দেশপ্রেমিক? এই ধরনের বিভ্রান্তি আপনারা তৈরি করলে মানুষ হাসবে। মানুষ হাসি ছাড়া আর কিছু দেবে না।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট নগরের হ‌ুমায়ূন রশীদ চত্বরে আমরা বিএনপি পরিবারে উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে যুব এশিয়া কাপ বিজয়ী তরুণ ক্রিকেটার ইকবাল হোসেন ইমনের পরিবারকে উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা নিজের ক্ষমতাকে নিরাপদ করার জন্য, ক্ষমতায় থাকার জন্য, ১৯৭১ সালের ৩০ লক্ষ শহীদ ও দুই লাখ নারী নির্যাতিত হয়েছিলেন, এই অর্জনের মধ্যে দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে দ্বিতীয়বার কলঙ্কিত করেছেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ন্যায় শেখ হাসিনা। সিলেটের এম ইলিয়াস আলী আজ নাই শেখ হাসিনার কারণে। কারণ, তিনি দেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি টিপাইমুখ বাঁধে লংমার্চ করে এসে প্রতিবাদ করেছিলেন। মানুষ বলে তাকে এই কারণে নিরুদ্দেশ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের নেত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁকে অসুস্থ করা হয়েছে, তিনি গ্রেপ্তারের আগে চোখে অপারেশন করে এসেছিলেন। যে রুমটিতে রাখা হয়েছে, সেটি একটি ২০০ বছরের পুরোনো একটি বিল্ডিংয়ের পুরোনো একটি রুমের মধ্যে, চারদিকে বালি আর ধোঁয়া উড়ে। যার চোখে অপারেশন হয়েছে, তাঁকে ওই রুমটি দেওয়া হয়েছে, যাতে তিনি আরও অসুস্থ হন এই কারণে। তারপরও বিএনপি দেশনেত্রীর মুক্তির পাশাপাশি গণতন্ত্র উদ্ধারের সংগ্রামে কখনোই পিছপা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে যেসব বাচ্চা, শিশু, শ্রমিক-জনতা আত্মদান করেছেন, তাঁদের সেই বহুমাত্রিক আত্মদানকে শ্রদ্ধা জানাই। তাঁদের যেমন বিচার হতে হবে, ঠিক তেমনিভাবে গত ১৫ বছর গণতন্ত্রকে উদ্ধারের জন্য যারা অকাতরে জীবন দিয়েছেন, যারা নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছেন, তাঁদের কেন বিচার হবে না। তাঁদেরও তো বিচার হওয়া উচিত। যারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিচার হওয়া উচিত। সেটা কেন হবে না?’

নতুন পাঠ্যবইয়ের কারিকুলামে পরিবর্তন আনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নতুন পাঠ্যবইয়ের কারিকুলামে পরিবর্তন আনা হয়েছে, আমরা সেটারও দ্বিমত করছি না। সেখানে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী, সেখানে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, সেখানে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের নাম রয়েছে, ঠিক আছে কোনো অসুবিধা নাই। স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত, এখানে একটা অধ্যায় রাখা হলো না কেন? জিয়াউর রহমান তো শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হননি, সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং পাকিস্তানি কর্নেল জানজুয়াকে হত্যা করে সেখানে একটি যুদ্ধ হয়েছিল, সেই যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেটারও তো একটা ইতিহাস জড়িত আছে। তাহলে থ্রি, ফোর, ফাইভের এখানে মুক্তিযুদ্ধের একটা অধ্যায় থাকবে না কেন? সেটার সঙ্গে যাঁরা প্রবাসী সরকার হয়েছিলেন, সেটাও থাকতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের তো একটা অধ্যায় থাকবে। যতটুকু কাজ করেছেন, ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু অসম্পূর্ণ থাকবে কেন? মুক্তিযুদ্ধ তো একটা বড় ঘটনা।’

সিলেটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে যুব এশিয়া কাপ বিজয়ী তরুণ ক্রিকেটার ইকবাল হোসেন ইমনের পরিবারকে উপহার দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধিকার আন্দোলন করেছেন, সেটি একটি স্বাধীনতার জন্য মাঠ প্রস্তুত হয়েছিল। কিন্তু, শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতাযুদ্ধের কোনো বিশেষ ঘোষণা বা বিশেষ প্রস্তুতির কথা বলেননি। সেই আহ্বান তো তাঁর নাই। জোর করে যেটা বলেছেন, গায়ের শক্তি দিয়ে আওয়ামী লীগ যেটা বলেছে, সেটা ভিন্ন ব্যাপার। প্রকৃত ইতিহাস হচ্ছে, এই যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। যুদ্ধ শুরু হলো ৯ মাস। এর তো একটা অধ্যায় থাকতে হবে। সেই অধ্যায় রাখা হয়নি।’

‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে এবং সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও কাতার বিএনপির সভাপতি শরিফুল হক সাজুর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা আশরাফ হোসেন বকুল, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী ও এম নাসের রহমান, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।

অনুষ্ঠানে তরুণ ক্রিকেটার ইকবাল হোসেন ইমনের পরিবারের হাতে দুটি ব্যাটারিচালিত অটোর চাবি হস্তান্তর করেন অতিথিরা।

শাহজালালে খালেদা জিয়ার অপেক্ষায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

স্বাধীনতাবিরোধী দল পেছন থেকে ছুরি মেরে দেশ ধ্বংস করতে চাচ্ছে: নোমান

কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

৭ জানুয়ারি বিদেশ যাচ্ছেন খালেদা জিয়া