গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই। তাঁরা এখন হম্বিতম্বি করছে, গুন্ডা বাহিনী পুলিশ বাহিনী দিয়ে দমিয়ে রাখা হচ্ছে; তাঁদের নেতারা উন্মাদ হয়ে গেছেন, রাজনৈতিক শিষ্টাচার আপনাদের (আওয়ামী লীগ) নাই।’
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের উদ্যোগে শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও ভোটাধিকারের দাবিতে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সরকার ভয় পেয়ে গেছে। তাই তারা জনগণকে ভয় দেখাচ্ছে। বেশি ভয় পেয়ে গেলে জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকে তাঁরা। নিজের ভয় কাটানোর জন্য এই সরকার এখন জোরে জোরে চিৎকার করছে।’
জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ‘ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী শক্তিকে উপড়ে ফেলার লড়াইয়ে নেমেছি। এ লড়াই ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। যদি না সংবিধান, ক্ষমতা কাঠামো, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা এক ব্যক্তির হাতে এটাকে বদলাতে না পারি তাহলে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। বাংলাদেশের ভোটাধিকার লড়াইয়ের কাফেলা তৈরি হচ্ছে, যে কাফেলার সংগ্রামে সবাই শামিল হচ্ছে, সেই সংগ্রামের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
বাংলাদেশে এই সময়ে আসাদ আমাদের সামনে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে হাজির হয়েছে উল্লেখ করে সাকি বলেন, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে আসাদসহ ত্রিশ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। সেই বাংলাদেশকে বর্তমান সরকার খাদের কিনারায় নিয়ে গেছে। দুর্নীতি-লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনীতি ভয়াবহ খাদের মাঝে পড়েছে, জনগণের ভোটাধিকার না থাকায় তাঁরা (সরকার) ন্যূনতম জবাবদিহির মধ্যে আসছে না।’
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘মেট্রোরেলসহ সারা দেশের সকল গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফপাস নিশ্চিত করতে হবে। সড়ককে সকলের চলাচলের জন্য নিরাপদ করতে হবে। গণ রুম-গেস্টরুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। প্রথম বর্ষ থেকেই সকল শিক্ষার্থীর জন্য বৈধ সিটের ব্যবস্থা করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে মশিউর রহমান খান রিচার্ড বলেন, ‘বর্তমানে সরকার স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছে, তাঁদের স্মার্ট বাংলাদেশে জনগণের ভোটাধিকার নাই, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নাই। তাঁদের হাতে লেগে আছে বিশ্বজিতের রক্ত, লেগে আছে আবরারের রক্ত। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন খুন করার দায় নিয়ে বসে আছে। বাংলাদেশকে তাঁরা একজন ব্যক্তির বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে আমরা কোনো ব্যক্তির বাংলাদেশ হতে দেব না। পৃথিবীতে কোনো স্বৈরাচার দমন-পীড়ন চালিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে নাই। এই সরকারও পারবে না, বর্তমান সরকারের পতন ঘটিয়ে আমরা এই দেশের মানুষের ভবিষ্যৎকে নিরাপদ করব।’