বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘যখন ছাত্র ছিলাম লেখাপড়া করেছি। আমার বন্ধুরা লেখাপাড়া শেষে যাথারীতি চাকরি করছে। কোটার কথা কখনো শুনি নাই। কিসে কোটা, কার জন্য এই কোটা। যে লেখাপড়া ভালো করে, সে আগে চাকরি পাবে। কোটা কার জন্য। যদি বলেন মুক্তিযোদ্ধা কোটা, তাহলে শতভাগ দেন। কিন্তু কয়জন প্রকৃতি মুক্তিযোদ্ধা জীবিত আছেন।’
আজ শনিবার বিকেলে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের খন্দকার দেলোয়ার হোসেন ‘ল’ কলেজ প্রাঙ্গণে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে তাদের সন্তানদের কোটা দেবেন, এটা মেনে নেবো না, এখানে আমাদের আপত্তি আছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের কোটা দেন। এটা তাদের প্রাপ্য। আর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধের যেন যাথাযথ সম্মান দেওয়া হয়, এটাও তাদের কাম্য। এই কোটা ব্যতীত মেধার ভিত্তিতে চাকরি দিতে হবে। আর না হলে এই দেশ মেধা শূণ্য হয়ে যাবে। এই দেশের অফিসগুলোতে মেধাশূন্য মাথাভারি প্রশাসন হবে এবং দেশ ভালোভাবে চলতে পারবে না। সুতরাং শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন ভুল পথে যাচ্ছে না, তারা সঠিক পথেই আছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্বাস বলেন, ‘শিক্ষকদের বলা হয়েছে, আপনাদের বেতনের এত টাকা পেনশনে রাখতে হবে আর এত টাকা আপনারা পাবেন। ভাগ করে দেওয়া হয়েছে, কেন ভাই? শিক্ষকদের বেতনের ওপর হামলা কেন? শিক্ষকদের ওরা (আওয়ামী লীগ সরকার) ট্রায়েল দিচ্ছে, সার্বজনীন পেনশন কেন? কি কারণে? জনতা ব্যাংকের চার হাজার পাঁচ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম আপনার মাফ করে দিলেন। বড় বড় চোরদের বিশাল চুরি করার সুযোগ করে দিলেন। আর পেনশন স্কিম করেন, এই টাকা যায় কোথায়?
আব্বাস বলেন ‘আমাদের কষ্টের টাকা, মাথার ঘাম পায়ে ফেলানোর টাকা, ট্যাক্সের টাকা লুট করে বিদেশে থাকা আপনার ছেলেদের জন্য দামি দামি গাড়ি কিনে দেবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) সদস্য মতিউরের ছেলে বিদেশের দামি গাড়ি চালাবে, দামি ফ্ল্যাটে থাকবে আর আমার দেশের কৃষকেরা তাদের শস্যের ন্যায্য মূল্য পাবে না। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে আজকে দেশের মানুষ পাগল প্রায়। আপনারা অপকর্ম করছেন, আর সার্বজনীন পেনশন স্কিম করছেন। দেশের কোষাগারের টাকা শূন্য হয়ে গেছে, এখন অন্যের পকেট কেটে তাদের টাকায় কোষাগার ভরতে হবে।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে যে কোনো মূল্যে আমাদের মুক্ত করতে হবে। তার মুক্তির ওপর নির্ভর করছে এই দেশের মানুষের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব। সুতরাং খাদেলা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে আরও বেগবান ও জোড়দার করতে হবে।’
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দ্যেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের সময় ৭১ এর যুদ্ধে যারা অংশ নিতে পারেনি নাই। তাদেরকে আবারও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য আরেক বার যুদ্ধ করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা রক্ষার্থে ৬০ লাখ মানুষকে রক্ত দিতে হবে।’
জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে বিএনপির ঢাকা বিভাগীর নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়্যেদুল আলম বাবুল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো, নজুরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবির প্রমুখ বক্তব্য দেন। সমাবেশে জেলা বিএনপিসহ সকল অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।