মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আটকে রেখেছিলেন জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরের নেতা-কর্মী ও তার সমর্থকেরা। ঢাকায় তাঁর জানাজার দাবিতে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে বিক্ষোভও হয়েছে। হাসপাতাল থেকে মরদেহ বের করার সময় হাসপাতালে ভেতর ও বাইরে কয়েক দফায় পুলিশ, জামায়াত, শিবিরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে চলে সংঘর্ষ।
আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরপর ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে ব্যাপক পুলিশি পাহারায় মরদেহবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে সাঈদীকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের উদ্দেশ্যে। তখন সাঈদীর সমর্থক ও জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায় মরদেহবাহী গাড়ি ঘিরে।
পরিস্থিতি বুঝে ভোর ৫টার দিকে পুলিশ মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। এ সময় কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় পুরো হাসপাতাল এলাকা। একপর্যায়ে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। তাঁরা হাসপাতাল ও শাহবাগ এলাকা ত্যাগ করে বিভিন্ন দিকে চলে যান।
আধঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স পুলিশের কড়া পাহারায় শাহবাগ এলাকা ছাড়ে। সংঘর্ষের সময় শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সামনের সড়কে মোটরসাইকেলে আগুন দেন এবং পুলিশকে লক্ষ করে ইট, পাটকেল ছোড়েন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা।
দায়িত্বরত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহসহ অ্যাম্বুলেন্সটি যেন পুলিশ না নিয়ে যেতে পারে সেজন্য জামায়াতের নেতা–কর্মীরা চাকা পাংচার করে দেয় এবং সামনের গ্লাস ভাঙচুর করে। হাসপাতালের ভেতর অবস্থান করা জামায়াতের নেতা–কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়া হয়। এ ছাড়া হাসপাতালের বাইরে অবস্থান করা নেতা–কর্মীরা আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর চালায়।’
এখনো বিএসএমএমইউ এর ভেতরে, শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে ৷ এদিকে সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত রাতে জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরের প্রতিক্রিয়া ও কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানাতে আজ সকাল সাড়ে দশটায় এক সংবাদ সম্মেলন করা হবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের-ডিএমপির পক্ষ থেকে। ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কে এন রায় নিয়তি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।