প্রতিনিধি
জবি: নতুন প্রজাতির ব্যাঙ আবিষ্কার করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের (২০১০-২০১১) শিক্ষার্থী হাসান আল রাজী চয়ন ও একই বিভাগের (২০১৬-২০১৭) মারজান মারিয়া। আজ শনিবার মুঠোফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসান আল রাজী চয়ন ও মারজান মারিয়া।
গত বছর জুনে সিলেটের মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে গবেষণার কাজের জন্য গেলে তারা সেখানে একটি ব্যাঙ দেখতে পায়। এরপর ব্যাঙটিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারেন যে, এটা আমাদের পরিচিত ব্যাঙের থেকে কিছুটা আলাদা প্রকৃতির। তারপর তারা ব্যাঙটি নিয়ে বিস্তর গবেষণা করে বুঝতে পারেন যে, এটা পুরো বিশ্বের জন্য একদম নতুন প্রজাতির ব্যাঙ।
নতুন প্রজাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তারা এ ব্যাঙের শারীরিক পরিমাপ এবং এদের মলিকুলার বিশ্লেষণের পাশাপাশি ডাকের বিশ্লেষণও করেন। পরে তারা নিশ্চিত হন এটি অন্যান্য ব্যাঙদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
পরবর্তীতে গত বছরের নভেম্বরে `জার্নাল অফ ন্যাচারাল হিস্টরি' জার্নালে গবেষণাপত্রটি জমা দেওয়া হয়। তিনটি রিভিউর পর জার্নালে এ গবেষণার বিষয়টি গ্রহণ করা হয়। তিন মাসের এ গবেষণা শেষে গতকাল বিষয়টি প্রকাশিত হয়। যার মধ্যে বনে কাজ ছিল এক সপ্তাহ ও বাকি কাজ ছিল ল্যাবে। তারা ব্যাঙটির নামকরণ করেছেন প্রাপ্তিস্থান সিলেটের নাম অনুযায়ী "Leptobrachium sylheticum।"
হাসান আল রাজী চয়ন বলেন, নতুন প্রজাতির এই ব্যাঙটি আমাদের দ্বিতীয় আবিষ্কার। নতুন কিছু আবিষ্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করাটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দদায়ক। ইতিমধ্যে আমাদের আরও একটা ব্যাঙ নিয়ে গবেষণা চলছে। যেটা খুব দ্রুতই ঘোষণা হবে। ব্যাঙটি মূলত লাউয়াছড়া বন থেকে পাওয়া। এর আগেও আমরা ওই বন থেকে আরও একটি ব্যাঙ আবিষ্কার করেছি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বনটি হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। বিভিন্ন কারণে বনের প্রাণ পানির ছড়াগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। বনের ছড়াগুলো ব্যাঙের আবাসস্থল। তাই আমাদের ছড়াগুলো রক্ষার্থে এগিয়ে আসতে হবে।
মারজান মারিয়া বলেন, নতুন প্রজাতির এই ব্যাঙ আবিষ্কার করে আমরা অনেক খুশি। নতুন এই ব্যাঙ টি আবিষ্কার আমাদের জন্য একটা অনুপ্রেরণা। নতুন কিছু আবিষ্কার করে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পেরে আমরা গর্বিত। ভবিষ্যতে এমন আরও কাজ করতে চাই।
এর আগে তারা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে "raorchestes rezakhani" নামে পুরো বিশ্বের জন্য নতুন প্রজাতির ব্যাঙ আবিষ্কার করেছিলেন।