আজকের পত্রিকা ডেস্ক
প্রায় ৪২০ বছর আগের কথা। বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি তাঁর বানানো একটি টেলিস্কোপের সাহায্যে দেখতে পেলেন সূর্যের ৬ নম্বর গ্রহ শনির চারপাশে অস্পষ্ট কিছু রয়েছে। আরে, মানুষের মতো গ্রহেরও কান আছে নাকি! ভাবলেন তিনি। পরে জানা গেল, অস্পষ্ট এই বস্তু আসলে শনি গ্রহের চারপাশের বলয়। আজ সৌরজগতের কোনো ছবি সামনে এলেই এই বলয়ের কারণে শনিকে চট করে চেনা যায়। তবে কবে, কখন এবং কীভাবে শনির চারপাশে এই বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে, তা এত দিন অজানা ছিল।
সেই রহস্য উন্মোচন করলেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল মহাকাশ গবেষক। তাঁরা বলছেন, ১০-২০ কোটি বছর আগে ক্রাইসালিস নামের একটি বরফাচ্ছন্ন চাঁদ (উপগ্রহ) দৈত্যাকৃতির এই গ্যাসীয় গ্রহ শনির খুব কাছাকাছি চলে আসে। আর এতে উপগ্রহটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। শনি গ্রহের প্রভাবে ভেঙে যাওয়া ছোট ছোট বরফের টুকরো চারপাশে গড়ে তোলে এই বলয়। গবেষণায় পাওয়া এ তথ্য গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী সায়েন্স।
৪৫০ কোটি বছর আগে শনি গ্রহের জন্ম হয় বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। সৌরজগৎ গঠনের বেশি দিন পরে নয়। কয়েক দশক আগে ধারণা করা হয়েছিল, শনি গ্রহের চারপাশের বলয় ১০ কোটি বছর আগে গঠিত। ২০০৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত শনির চারপাশে ঘুরেছে মহাকাশযান ক্যাসিনি প্রুব। এর দেওয়া তথ্য থেকেই এ ধারণা। গণিতের বিভিন্ন মডেল যাচাই করে এবার জানা গেল, এ অনুমান প্রায় কাছাকাছি। ক্রাইসালিস পৃথিবীর চাঁদ থেকে কিছুটা ছোট।
শনি নিয়ে রহস্যের কিনারা হলেও এই গ্রহের জন্য রয়েছে একটি দুঃসংবাদ। সম্প্রতি মহাকাশ গবেষকেরা জানিয়েছেন, শনি গ্রহের ৮৩টি উপগ্রহের মধ্যে সবচেয়ে বড় উপগ্রহ টাইটান ক্রমেই এই গ্রহ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। গড়ে প্রতিবছর ১১ সেন্টিমিটার সরে যাচ্ছে টাইটান।