Ajker Patrika
হোম > বিজ্ঞান

নিয়ান্ডারথালদের থেকে মস্তিষ্ক বিকশিত হতে বেশি সময় নেয় আধুনিক মানুষ

অনলাইন ডেস্ক

নিয়ান্ডারথালদের থেকে মস্তিষ্ক বিকশিত হতে বেশি সময় নেয় আধুনিক মানুষ

প্রাণী জগতের নানা প্রজাতির মতো মানুষেরও রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতি। বিবর্তনের কারণে অন্য সব প্রজাতিকে হটিয়ে আধুনিক মানুষ হিসেবে বর্তমানে আমরা অর্থাৎ হোমো সেপিয়েন্সরাই প্রতিষ্ঠিত। মানুষেরই এক নিকটতম প্রজাতি নিয়ান্ডারথাল মানব। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন—মানুষের জন্মের সময় তাঁর মস্তিষ্ক গঠনের স্টেম সেলগুলো বিভাজিত হওয়ার সময় তুলনামূলক বেশি সময় নেয় এবং বিভাজনের ফলে সৃষ্ট নতুন কোষে ক্রোমোজোম বণ্টনের সময় কম ভুল করে।

বিজ্ঞানবিষয়ক সংবাদমাধ্যম সায়েন্স ডেইলির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে। জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট অব মলিকুলার সেল বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স এবং ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ইভোল্যুশনারি অ্যানথ্রোপলজির গবেষকেরা ইঁদুরের ওপর পরিচালিত এক গবেষণার ভিত্তিতে এই তথ্য জানিয়েছেন।

গবেষকেরা দেখেছেন যে, মানুষের মস্তিষ্ক অর্থাৎ নিউরন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় স্টেম সেলগুলো বিভাজনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে বেশি সময় নেয়। একই সঙ্গে ক্রোমোজম বণ্টনের ক্ষেত্রেও নিয়ান্ডারথালদের তুলনায় কম ভুল করে। এমনকি শিম্পাঞ্জিদের তুলনায়ও মানুষের ব্রেইনের স্টেম সেলগুলো কম ভুল করে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই গবেষণা থেকে কীভাবে মানুষের মস্তিষ্ক কাজ করে এবং কীভাবে তা বিকশিত হয়েছে তা বোঝা যাবে।

সায়েন্স ডেইলির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই গবেষণা থেকে মানুষ ও নিয়ান্ডারথালদের মস্তিষ্ক কোষের বিকাশের পার্থক্যও বোঝা যাবে। নিয়ান্ডারথালদের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সময় মানুষের প্রায় ১০০টি অ্যামিনো অ্যাসিডের পরিবর্তন হয় এবং তা ধীরে ধীরে সব আধুনিক মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এই পরিবর্তনের বিষয়টি বিজ্ঞানীদের বিভ্রান্ত করেছিল। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় বিজ্ঞানীর ৬টি অ্যামিনো অ্যাসিডের পরিবর্তনের কারণ খুঁজে পেয়েছেন। যা তিন ধরনের প্রোটিন কোষ গঠনের অন্যতম উপাদান। যা আমাদের দেহে কোষ বিভাজনের সময় ক্রোমোজোম বিতরণে ভূমিকা পালন করে।

এই ৬টি অ্যামিনো অ্যাসিড ইঁদুর এবং নিয়ান্ডারথাল উভয়ে ক্ষেত্রে একই রকমের। ফলে এই ইঁদুরগুলো বিজ্ঞানীদের মানব মস্তিষ্কের বিকাশ অধ্যয়নের জন্য একটি নতুন দ্বার উন্মোচন করে। গবেষক দলের প্রধান ফেলিপ মোরা-বারমুডেজ বলেন, ‘আমরা দেখতে পেয়েছি যে দুটি প্রোটিনের মধ্যে তিনটি আধুনিক মানুষের অ্যামিনো অ্যাসিড মতোই যা মস্তিষ্কের স্টেম সেল বিভাজনের ক্ষেত্রে মেটাফেজ ধাপটিকে দীর্ঘায়িত করে। ফলে ক্রোমোজোমগুলোও কোষ বিভাজনের জন্য প্রস্তুত হতে দীর্ঘ সময় পায় এবং এর ফলে বিভাজনের সময় কম ত্রুটি ঘটে যখন।’

নিয়ান্ডারথাল ও আধুনিক মানুষ উভয়েই একই পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে। জেনেটিক গবেষণাও প্রমাণ করে, আমাদের ডিএনএর কিছু অংশ পূর্বপুরুষদের থেকে নিয়ান্ডারথালদের সঙ্গে ভাগ করে পেয়েছে আধুনিক মানুষেরা। গবেষকেরা বলছেন, আধুনিক মানুষেরা তাদের আবাস দখল করায় নিয়ান্ডারথালরা ৪০ হাজার বছর আগে বাস্তুচ্যুত হয়। একটি বড় সংখ্যক নিয়ান্ডারথালের খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতার সংকোচনও তাদের জায়গায় আধুনিক মানুষ দ্রুত প্রতিস্থাপিত হয়েছে।

বিজ্ঞান সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

চাঁদের অন্ধকার মেরুতে অবতরণের পর বিকল বাণিজ্যিক মহাকাশযান অ্যাথেনা

৪৭ বছরের পুরোনো দুটি মহাকাশযানের বৈজ্ঞানিক যন্ত্র বন্ধ করছে নাসা

৪৫ কোটি গ্যালাক্সির মানচিত্র তৈরি করবে নাসার নতুন মিশন

অতিকায় ম্যামথ ফিরিয়ে আনার মিশনে জন্ম নিল লোমশ ইঁদুর

নিকোটিন বা অ্যালকোহলের মতো আসক্তি তৈরি করে স্মার্টফোন: গবেষণা

সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদে কী হয়, দেখতে গেল মার্কিন চন্দ্রযান

৩৬০ কোটি বছর আগে সমুদ্র ছিল মঙ্গলে, উপকূলরেখা শনাক্ত করল চীনা যান

১১ হাজার বছর পর আবার বরফে ঢেকে যাবে পুরো পৃথিবী: গবেষণা

পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্য থেকে ব্যাটারি, রিচার্জ ছাড়াই চলবে বহু বছর

তীব্র ঠান্ডায়ও মেরু ভালুকের লোমে বরফ জমে না যে কারণে