Ajker Patrika
হোম > বিজ্ঞান

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মিলল সালফার ও অক্সিজেন, জানাল রোভার প্রজ্ঞা

অনলাইন ডেস্ক

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মিলল সালফার ও অক্সিজেন, জানাল রোভার প্রজ্ঞা

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে চন্দ্রযান-৩-এর রোভার প্রজ্ঞা। গত সপ্তাহে অবতরণের পর ভারতীয় মহাকাশযানটি এই প্রথম চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) বলছে, মহাকাশযানটির রোভার (রোবটযান) চাঁদের পৃষ্ঠে লেজার ছুড়ে সালফারের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে।

চন্দ্রযান-৩ মিশনের রোভার প্রজ্ঞাতে রয়েছে লেজার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্প্রেকট্রোস্কপি (এলআইবিএস) যন্ত্র। এটিই প্রথম ইন-সিটু (প্রত্যক্ষ) পরিমাপক যন্ত্র যা চাঁদের দক্ষিণ পৃষ্ঠের বিভিন্ন উপাদানের গঠন পর্যবেক্ষণ করতে পারে। এই পরিমাপ স্পষ্টভাবে সালফারের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে।

ইসরো বলছে, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে অ্যালুমিনিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ক্রোমিয়াম ও টাইটানিয়ামের উপস্থিতির ইঙ্গিত মিলেছে। অধিকতর পর্যবেক্ষণ ও পরিমাপে ম্যাংগানিজ, সিলিকন ও অক্সিজেনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এখন চাঁদের পৃষ্ঠে হাইড্রোজেনের উপস্থিতি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণ চলছে।

এখন পর্যন্ত রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মহাকাশযান চাঁদে সফলভাবে অবতরণ করতে পেরেছে। তবে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল অবতরণের সাফল্য শুধু ভারতের। একই সময় রাশিয়াও দক্ষিণ মেরুতে লুনা–২৫ অবতরণ করানোর চেষ্টা করেছিল, তবে সেটি শেষ মুহূর্তে বিধ্বস্ত হয়।

ধারণা করা হচ্ছে, চাঁদের সবচেয়ে পানি সমৃদ্ধ এলাকা সেটির দক্ষিণ মেরু। প্রজ্ঞা রোভার লেজার দিয়ে আগামী দুই সপ্তাহ বরফ-পানির সন্ধান করবে। সেই সঙ্গে সেখানকার আবহাওয়া ও দক্ষিণ মেরুর গঠন নিয়ে পর্যবেক্ষণ করবে।

লাভার আলো দেখে গবেষকেরা বিভিন্ন কণার তরঙ্গদৈর্ঘ্য শনাক্ত করতে পারবে। ছবি: ইসরোচাঁদের এই রহস্যময় অন্ধকার অঞ্চলে বরফ আকারে পানি আছে বলে ধারণা করা হয়। সেটি সত্য হলে সেখানে মানুষের ভবিষ্যৎ উপনিবেশ সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে রয়েছে খনি থেকে মূল্যবান ধাতু উত্তোলনের সুযোগ এবং মঙ্গল অভিযানের ট্রানজিট। 

বিশেষ করে বিজ্ঞানীরা চাঁদের এই বরফ নিয়ে আগ্রহী। কারণ, এই বরফ চাঁদের আগ্নেয়গিরি, পৃথিবীতে আসা ধূমকেতু ও গ্রহাণু এবং আদি সমুদ্র সৃষ্টির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে। 

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যদি যথেষ্ট পরিমাণে বরফ থাকে তাহলে দীর্ঘ চন্দ্র অভিযান এবং যন্ত্রপাতি ঠান্ডা রাখার জন্য জন্য প্রয়োজনীয় পানির উৎস পাওয়া যাবে। এ ছাড়া মহাকাশযানের জ্বালানির জন্য পাওয়া যাবে হাইড্রোজেন এবং বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন। এটি মঙ্গল গ্রহে অভিযান এবং চাঁদে খনি কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজন হবে। 

ভারত চন্দ্রযান-৩ মিশনের রোভারটির নাম দেওয়া হয়েছে প্রজ্ঞা। এই সংস্কৃত শব্দের অর্থ বুদ্ধি, মেধা বা অনুধাবন ক্ষমতা। এই রোভারটির ওজন মাত্র ৫৭ পাউন্ড (২৫.৮ কেজি)। এর মধ্যে লেজার-বেস এলআইবিএস টুল ও আলফা-পারটিক্যাল বিম (আলফা রশ্মি) রয়েছে। এলআইবিএস টুলটি চাঁদের পৃষ্ঠে তীব্র লেজার ছুড়ে কঠিন শিলা গলিয়ে দিতে পারে। এই লাভার আলো দেখে গবেষকেরা বিভিন্ন কণার তরঙ্গদৈর্ঘ্য পরিমাপ করে শিলার উপাদান শনাক্ত করতে পারেন।

আরও পড়ুন:

সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদে কী হয়, দেখতে গেল মার্কিন চন্দ্রযান

৩৬০ কোটি বছর আগে সমুদ্র ছিল মঙ্গলে, উপকূলরেখা শনাক্ত করল চীনা যান

১১ হাজার বছর পর আবার বরফে ঢেকে যাবে পুরো পৃথিবী: গবেষণা

পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্য থেকে ব্যাটারি, রিচার্জ ছাড়াই চলবে বহু বছর

তীব্র ঠান্ডায়ও মেরু ভালুকের লোমে বরফ জমে না যে কারণে

ডুমস ডে ভল্টে যুক্ত হলো আরও ১৪ হাজার ফসল বীজ

গভীর মহাকাশে মূল্যবান ধাতুর সন্ধানে যাচ্ছে মহাকাশযান ওডিন

এক সারিতে আসবে সৌরজগতের ৭ গ্রহ, বিরল দৃশ্য দেখবেন যেভাবে

প্লুটো দিবস আজ, গ্রহের মর্যাদা হারালেও আগ্রহের কেন্দ্রে

উদ্ভিদের ক্ষত সারাবে ব্যাকটেরিয়ার সেলুলোজ ব্যান্ডেজ: গবেষণা