Ajker Patrika
হোম > বিজ্ঞান

পৃথিবীর তেজস্ক্রিয় অঞ্চল পাড়ি দিয়ে রেকর্ড গড়ল নাসার কম্পিউটার

অনলাইন ডেস্ক

পৃথিবীর তেজস্ক্রিয় অঞ্চল পাড়ি দিয়ে রেকর্ড গড়ল নাসার কম্পিউটার
নাসার এই বিশেষ কম্পিউটারটি ভ্যান অ্যালেন বেল্ট সফলভাবে পাড়ি দিয়েছে। ছবি: নাসা

পৃথিবীকে ঘিরে থাকা তীব্র তেজস্ক্রিয় অঞ্চল পাড়ি দিয়ে রেকর্ড গড়ল নাসার পরীক্ষামূলক তেজস্ক্রিয় সহনশীল কম্পিউটার (র‍্যাডপিসি)। কম্পিউটারটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে এটি তেজস্ক্রিয় বিকিরণ সহ্য করতে পারে এবং মহাকাশ ভ্রমণের সময় ঠিকভাবে কাজ করে। এটি ভবিষ্যতের মহাকাশ মিশনগুলোর জন্য উপকারী হবে।

নাসার এই বিশেষ কম্পিউটারটি ভ্যান অ্যালেন বেল্ট সফলভাবে পাড়ি দিয়েছে। ভ্যান অ্যালেন বেল্ট হলো পৃথিবীকে ঘিরে থাকা দুটি তেজস্ক্রিয় অঞ্চল। পৃথিবী থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার ওপরে অবস্থান করে এই দুটি অঞ্চল। পৃথিবীর চুম্বকীয় ক্ষেত্র মাধ্যমে এটি সৃষ্টি হয়। সৌর রশ্মি এবং মহাশূন্য থেকে আসা অন্যান্য বিপজ্জনক তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে ভ্যান অ্যালেন বেল্ট।

১৯৫৮ সালে মহাকাশে এক্সপ্লোরার ১ স্যাটেলাইট পাঠানোর পর এই বেল্টগুলো সম্পর্কে তথ্য পান মহাকাশ বিজ্ঞানী জেমস ভ্যান অ্যালেন। আর তাঁর নামানুসারে এই দুই অঞ্চলের নাম রাখা হয়।

গত ১৫ জানুয়ারি স্পেসএক্স ফ্যালকন রকেটের মাধ্যমে মহাকাশে পাঠানো হয় কম্পিউটারটি। নাসা এই যন্ত্রটি পাঠানোর জন্য ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেসের একটি মিশনের সাহায্য নেয়। ‘ব্লু ঘোস্ট’ নামের একটি মহাকাশযান চাঁদে অবতরণ করানোই হলো এই মিশনের মূল্য লক্ষ্য।

চাঁদে যাওয়ার আগে তিন সপ্তাহের বেশি সময় পৃথিবীর কক্ষপথে অবস্থান করে ব্লু ঘোস্ট। এই সময়ে এটি ভ্যান অ্যালেন বেল্টের মধ্য দিয়ে চলছিল, যা র‍্যাডপিসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ, তেজস্ক্রিয়তা এবং কম্পিউটার একসঙ্গে কাজ করতে পারে না। একটি উচ্চশক্তির কণা কম্পিউটারের জন্য ‘সিঙ্গেল ইভেন্ট ইফেক্ট’ তৈরি করতে পারে, যার ফলে ডিভাইসের ডেটায় ত্রুটি দেখা দিতে পারে। এটি কম্পিউটার ক্র্যাশে এবং ডিভাইসের স্থায়ী ক্ষতিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

কম্পিউটারের ওপর মানুষ দিন দিন আরও বেশি নির্ভরশীল হচ্ছে। আর মহাকাশে এই যন্ত্রগুলো আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তাই নাসা এমন শক্তিশালী কম্পিউটার তৈরি করতে চায়, যা মহাকাশে অনায়াসে ভ্রমণ করতে পারবে। এ জন্য র‍্যাডপিসি কম্পিউটারটির তৈরি করছে সংস্থাটি।

এটি তেজস্ক্রিয়ার বিরুদ্ধে তিন গুণ বেশি প্রতিরোধী বলে দাবি করছেন নাসার বিজ্ঞানীরা এবং ইতিমধ্যে এর কিছু প্রোটোটাইপ কক্ষপথে পাঠানো হয়েছে। র‍্যাডপিসি একটি মাইক্রোকন্ট্রোলার এর মাধ্যমে হার্ডওয়্যার ত্রুটি সারিয়ে তোলে।

নাসার বলছে, র‍্যাডপিসি এমন একটি প্রযুক্তি, যা তেজস্ক্রিয় রশ্মির আক্রমণ ঘটলে এটি ত্রুটির অবস্থান চিহ্নিত করে এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে সমস্যাটি সারিয়ে তোলে।

এ ছাড়া, র‍্যাডপিসিতে তিনটি ডোজিমিটার রয়েছে, যা ব্লু ঘোস্টের মাধ্যমে পৃথিবীর চুম্বকীয় পরিবেশ এবং সৌর বায়ু সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করবে।

এ ছাড়া, এই যন্ত্রগুলো চাঁদেও কাজ করবে এবং সেখানকার তেজস্ক্রিয় পরিবেশ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করবে, যা ভবিষ্যতের মানব মহাকাশ মিশনগুলোর জন্য সহায়ক হতে পারে।

এর আগে, ব্লু ঘোস্টকে সফলভাবে চাঁদে পৌঁছাতে হবে। ফায়ারফ্লাই আশা করছে, ব্লু ঘোস্ট ২ মার্চ চাঁদে অবতরণ করবে এবং ১৪ দিন টানা চলতে থাকবে, তারপর চাঁদের রাত্রির মুখোমুখি হতে হবে।

ল্যান্ডারটি চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছাতে চার দিন সময় নেবে। এরপর ১৬ দিন দিন ধরে উপগ্রহটির চারপাশে ঘুরে ২ মার্চে চাঁদে অবতরণ করবে।

তথ্যসূত্র: দ্য রেজিস্টার

নাসার টেলিস্কোপে দেখা গেল নেপচুনের মেরুপ্রভা

মঙ্গলে মানব অভিযানের প্রস্তুতি নিতে যেভাবে সাহায্য করছে নাসার রোবট

দাঁত কিড়মিড় করে হাঙর, প্রথমবারের মতো রেকর্ড করলেন বিজ্ঞানীরা

মঙ্গলে প্রাণের বিকাশে প্রয়োজনীয় জৈব যৌগ পেল নাসার রোবট

প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে মূল্যবান বস্তু বানালেন বিজ্ঞানীরা

মস্তিষ্কে সিলিকন চিপ, ভিডিও গেমে বন্ধুদের হারিয়ে দিচ্ছে পক্ষাঘাতগ্রস্ত নোলান্ড

ভিড়ের দুই প্রান্তে থেকেও কথা বলা যাবে একান্তে, প্রযুক্তি উদ্ভাবন জাপানি বিজ্ঞানীদের

ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া কি সম্ভব, বিজ্ঞান কী বলে

গুণমান বজায় রেখে ডিম সিদ্ধের সঠিক পদ্ধতি জানালেন বিজ্ঞানীরা

১৩৪০ কোটি আলোকবর্ষ দূরের গ্যালাক্সিতে অক্সিজেন খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা