অনলাইন ডেস্ক
সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের অন্যতম বড় বাধা— সোলার প্যানেলের বিশাল আকার। এর একটি সমাধান দিয়েছেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। তাঁরা সূর্যের আলো শোষনকারী উপাদান দিয়ে তৈরি করেছেন অতি-পাতলা ফিল্ম বা ঝিল্লী, যা বিশাল সোলার প্যানেলের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। যেকোনো কিছুর ওপর বসালেই এটি সোলার প্যানেলের মতো কাজ করবে।
আলো-শোষণকারী উপাদানের স্তুপীকরনের মাধ্যমে তৈরি করা হয় ‘পারোসকাইট’ (Perovskite) নামের অতি-পাতলা ও নমনীয় এই ঝিল্লী। এটি এক মাইক্রনের (১ হাজার ন্যানোমিটারের ১ মাইক্রোন বা মাইক্রোমিটার হয়) চেয়ে কিছুটা বেশি পুরু।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, নতুন উপকরণগুলো গতানুগতিক সিলিকন ওয়েফার বা চাকতির চেয়ে ১৫০ গুণ বেশি পাতলা এবং একক-স্তর সিলিকন ফটোভোলটাইক্সের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনসক্ষমতা তৈরি করতে পারে।
অক্সফোর্ডের পদার্থবিদ্যা বিভাগের পোস্ট-ডক্টরাল ফেলো ড. শাউইফেং হু বলেন, ‘এই পদ্ধতির মাধ্যমে ফটোভোলটাইক ডিভাইস (সোলার প্যানেলের মতো যন্ত্র) ৪৫ শতাংশের বেশি দক্ষতা অর্জন করতে পারে।’
এই নতুন পদ্ধতি সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমাতে পারে। পাতলা ও নমনীয়তার কারণে এগুলো কোনো কিছুর পিঠে প্রয়োগ করা যেতে পারে। এর নির্মাণ ও স্থাপনের খরচও কম। ফলে এটি আরও টেকসই সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়াতে পারে।
তবে এই প্রযুক্তি এখনো পরীক্ষা–নিরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে এবং দীর্ঘ মেয়াদে এর স্থিতিশীলতার বিষয়েও কিছু বলেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি।
পারোসকাইট নিয়ে ২০১৬ সালের দ্য সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত ‘সোলার এনার্জি ম্যাটেরিয়ালস অ্যান্ড সোলার সেলস’ নামে গবেষণাপত্রে বলা হয়, পারোসকাইট অধিক সক্ষমতাসহ কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। কিন্ত আর্দ্রতার প্রতি সংবেদনশীলতার কারণে এর ‘স্থিতিশীলতা কম’।
গত এক দশকে বিদ্যুতের সস্তা বিকল্প হয়ে উঠেছে সৌরশক্তি। গ্লোবাল চেঞ্জ ডেটা ল্যাব অনুসারে, গত ১০ বছরে সৌর ফটোভোলটাইক প্রযুক্তির খরচ কমেছে ৯০ শতাংশ।
সারা বিশ্বে নতুন নতুন সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। চলতি মাসের শুরুতে ৮ হাজার একর জমি নিয়ে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ বিভাগ। সেটি আগে পারমাণবিক বোমা তৈরির ‘ম্যানহাটন প্রকল্পে’র জায়গা ছিল। এই অঞ্চলে ১ গিগাওয়াট পাইপলাইন তৈরি করতে তাইওয়ানের একটি সোলার কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছে গুগল।
তথ্যসূত্র: এন্ডগ্যাজেট