নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
টেনিসে এই উদ্যাপনটা খুব দেখা যায়—ম্যাচ শেষে দুদিকে দুই হাত ছাড়িয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়েছেন চ্যাম্পিয়ন তারকা। ট্রফি পাওয়ার পর সেটিকে কামড় বসানোর আগে রাফায়েল নাদালের চিরচেনা উদ্যাপনই ছিল কোর্টের মেঝেয় শুয়ে পড়া। যে উদ্যাপনে এখন দেখা যায় নাদালেরই স্বদেশি কার্লোস আলকারাসকে। অবশ্য দূরপাল্লার দৌড় শেষেও কেউ কেউ ক্লান্ত হয়ে আসা শরীরটা নাদাল-আলকারাসের ধরনেই এলিয়ে দেন। পরশু ছেলেদের ৪০০ মিটার দৌড়ে প্রথম হওয়ার পর একই কায়দায় ট্র্যাকে শুয়ে পড়েন কুইন্সি হল। যুক্তরাষ্ট্রের ২৬ বছর বয়সী হল এই ইভেন্টে সোনা জিতেছেন ৪৩.৪০ সেকেন্ড সময় নিয়ে।
পেশাদার ট্র্যাকে পা রাখার পর এটিই সেরা টাইমিং কুইন্সি হলের। সময়ের সীমারেখা তুলে নিলে এটি এই ইভেন্টের ইতিহাসেরই চতুর্থ সেরা টাইমিং। ৪৩.৪৪ সেকেন্ড টাইমিং করে রুপাজয়ী ব্রিটেনের ম্যাথু হাডসন-স্মিথ। ব্রোঞ্জ পাওয়া জাম্বিয়ার মুজলা সামুকোঙ্গা টাইমিং করেছেন ৪৩.৭৪ সেকেন্ড। সেরা তিনের এই টাইমিংই বলে দেয়—কী হাড্ডাহাড্ডি লড়াই-ই না হয়েছে এই ইভেন্টে। তিনজনই ক্যারিয়ারসেরা টাইমিং করেছেন। এখানেই শেষ নয়, প্রথম পাঁচ প্রতিযোগীই দৌড় শেষ করেছেন ৪৪ সেকেন্ডের কম সময় নিয়ে।
প্রাক্ লড়াই এই ইভেন্টে ফেবারিট ছিলেন গ্রেট ব্রিটেনের ম্যাথু হাডসন-স্মিথ। একটা সময় মনে হয়েছিল, সোনাটা তিনিই জিততে যাচ্ছেন। প্রথম ৩০০ মিটারে প্রথম তিনেই ছিলেন না হল। কিন্তু শেষ ১০০ মিটারে দৌড়ের গতি এমনই বাড়িয়ে দিলেন যে একে একে সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেন। তাতে হতাশ হলেন হাডসন-স্মিথ। তিনি জিতলে গত ১০০ বছরে এই ইভেন্টে হতেন সোনাজয়ী প্রথম প্রতিযোগী। এই প্যারিসেই ১৯২৪ অলিম্পিকে ব্রিটিশ প্রতিযোগী হিসেবে সোনা জিতেছিলেন এরিক লিডেল। কিন্তু তাঁর পাশে বসা হলো না ম্যাথু হাডসন-স্মিথের। তবে তিনি যে এই ৪৩.৪৪ সেকেন্ড টাইমিং করলেন, এটা তাঁর ক্যারিয়ারসেরা এবং এই ইভেন্টে ইউরোপিয়ান কোনো প্রতিযোগীর সেরা টাইমিংও।
কুইন্সি হল গত বছর আগস্টে বুদাপেস্ট বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে জিতেছিলেন ব্রোঞ্জ। এই ব্রোঞ্জই প্যারিস অলিম্পিকে সোনা জয়ের জন্য তাতিয়ে দিয়েছিল তাঁকে। একটা সময় মেন্টর হিসেবে পেয়েছেন আমেরিকারই গ্রেট অ্যাথলেট মরিস গ্রিনকে। মনের জোর ও অক্লান্ত পরিশ্রম দুয়ের মিশেলেই এসেছে হলের সাফল্য। ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে লাশন মেরিটের পর এই প্রথম ছেলেদের ৪০০ মিটারে যুক্তরাষ্ট্রকে সোনা এনে দিলেন হল।