ক্রীড়া ডেস্ক
প্যারিসেও বিজয় নিশান ওড়ালেন মিহাইন লোপেজ। একই ইভেন্টে টানা পাঁচ অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়। বয়সটা ৪২ ছুঁই ছুঁই হলেও দক্ষতা আর শক্তিতে কিউবান এই রেসলার যেন অপ্রতিরোধ্য! অলিম্পিকে রেসলিংয়ে তাঁর চেয়ে বেশি স্বর্ণ আর কারও ঝুলিতে নেই। এই ইভেন্টে তাঁকে রাজা বললে হয়তো খুব বেশি বাড়াবাড়ি হওয়ার কথা নয়।
অলিম্পিক টানা ৫ স্বর্ণ জয়ের রেকর্ড আর কারও নেই। দুই কিংবদন্তি কার্ল লুইস-মাইকেল ফেলপস টানা ৪ অলিম্পিকে স্বর্ণ জিতেছিলেন। লোপেজকে শুধু অলিম্পিক দিয়ে নয়, বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার তাঁকে কিংবদন্তি হিসেবেই ঘোষণা করছে। কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে প্রতিযোগিতা করা মানেই যেন স্বর্ণ জয় অবধারিত। রেসলিং ক্যারিয়ারে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে তাঁর নামের পাশে ৩৩টি স্বর্ণ,৪টি রুপা ও ১টি ব্রোঞ্জ পদক রয়েছে।
অলিম্পিকে ৫ স্বর্ণ—২০০৮ বেইজিং ও ২০১২ লন্ডনে ১২০ কেজি গ্রেকো-রোমান ইভেন্টে, ২০১৬ রিও দে জেনেইরো, ২০২০ টোকিও ২০২৪ প্যারিসে জেতেন ১৩০ কেজি ইভেন্টে। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে ৫ স্বর্ণের সঙ্গে ৩ রুপা, রেসলিং বিশ্বকাপে তিনবার ফাইনাল খেলে কখনো হারেননি লোপেজ, অর্জন করেন ৩ স্বর্ণ।
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি চ্যাম্পিয়নশিপে ১টি স্বর্ণ, প্যান আমেরিকান গেমসে ৫ স্বর্ণ, সেন্ট্রাল আমেরিকান ও ক্যারিবিয়ান গেমসে ৩টি স্বর্ণ, প্যান আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপে ৯ স্বর্ণ ও ১ রুপা, জুনিয়র প্যান আমেরিকান রেসলিং চ্যাম্পিয়নশিপে ২ স্বর্ণ, গ্র্যান্ড প্রিক্স ইভান পড্ডাবনিতে একমাত্র ব্রোঞ্জ পদকটি জেতেন লোপেজ।
গতকাল রেসলিংয়ের ১৩০ কেজি গ্রেকো-রোমান ইভেন্টের ফাইনালে ৬-০ ব্যবধানে চিলির প্রতিনিধিত্ব করা কিউবান বংশোদ্ভূত ইয়াসমানি আকোস্তাকে হারান লোপেজ। এই জয়ের মধ্য দিয়ে পেছনে ফেলেন লুইস ও ফেলপসের মতো কিংবদন্তিদের।
লুইস লং জাম্পে, ফেলপস সাঁতার ২০০ মিটার মেডলিতে, কেটি লেডেকি সাঁতার ৮০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে, আল ওয়েরতের ডিসকাসে, পল এলভেস্ট্রম সেইলিং এবং কাউরি ইচোর রেসলিংয়ে টানা ৪টি করে স্বর্ণ জিতেছিলেন।
মজার ব্যাপার হলো, প্যারিস অলিম্পিকে স্বর্ণ জিতে আবারও অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন লোপেজ। অবসর নেওয়ার আভাসটা আগেই দিয়েছিলেন। ফাইনালে ওঠে বলেছিলেন, ‘আমাদের তরুণদের সুযোগ করে দিতে হবে। সারা জীবন আমি রেসলিংকেই ভালোবেসেছি।’ বিদায়ের সঙ্গে শেষ হলো অলিম্পিকে লোপেজের ঈর্ষণীয় পারফরম্যান্স। ২২ জয়ের বিপরীতে হেরেছেন মাত্র একটি ম্যাচে। সেটিও ২০০৪ এথেন্স অলিম্পিকের কোয়ার্টার ফাইনালে।