স্মৃতিভ্রংশে আক্রান্ত রোগীর পতন ও অসুস্থ হওয়া ঠেকাতে তৈরি হাই-টেক মোজা নিয়ে গবেষণা চলছে। ‘স্মার্ট সক্স’ নামে এই হাই-টেক মোজার সেন্সর ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ আক্রান্ত রোগীদের ডেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংগ্রহ করে ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে রোগীর সেবা প্রদানকারীর ডিভাইসে ইনস্টল করা অ্যাপে পাঠাবে। স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ইক্সটারের গবেষকেরা এই মোজা তৈরি করেন। গবেষকদের দাবি, এই মোজা মাধ্যমে হৃৎস্পন্দন, তাপমাত্রা, ঘামের পরিমাণ ও গতিবিধি সম্পর্কিত ডেটা পাওয়া যায়। তা ডিমেনশিয়ার রোগীদের পড়ে যাওয়া ও অসুস্থতা ঠেকাতে সাহায্য করবে।
স্কাই নিউজের প্রতিবেদককে মোজাটির অন্যতম প্রস্তুতকারক ডা. জেকে স্টিয়ার বলেন, সেবা প্রদানকারী এক রুমে না থাকলেও রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
স্টিয়ার আরও বলেন, তিনি এই মোজাটি শুধু ডিমেনশিয়া রোগীদের ব্যবহারের জন্য তৈরি করেননি। তিনি এই মোজাটি অন্যদের ঘরেও ব্যবহার দেখতে চান। ডিমমেনশিয়া ছাড়াও সম্ভাব্য অন্যান্য অবস্থা যেমন অটিজম ও শেখার অক্ষমতা ইত্যাদির ক্ষেত্রে এই মোজা ব্যবহার করে উপকার পাওয়া যাবে। কারণ, এসব সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা অন্যদের সাথে সহজে যোগাযোগ করতে পারে না।
যুক্তরাজ্যে ব্রিস্টলে অবস্থিত বয়স্কদের সেবা প্রদানকারী সংস্থা দ্য গার্ডেন হাউস কেয়ার হোম এই মোজাটির পরীক্ষামূলক ব্যবহার হচ্ছে।
সংস্থাটির ম্যানেজার ফ্রান অ্যাশবি বলেন, এই মোজাটি রোগীদের পড়ে যাওয়া ঠেকাতে সাহায্য করেছে। কারণ, মোজাটির অ্যাপ আগেই সতর্ক করে দেয়। তা দেখে সেবা প্রদানকারীরা সঠিক সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। ফলে রোগী ও সেবা প্রদানকারী দুজনের ওপরেই চাপ কমে যায়। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে রোগীর সংক্রমণ, ব্যথা ও শরীরবৃত্তীয় লক্ষণগুলো পর্যবেক্ষণ করা যায়।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা বিভিন্ন নাসিং হোমে তাঁদের মোজার পরীক্ষামূলক ব্যবহার বৃদ্ধি করবেন।
প্রযুক্তিটি সেবা প্রদানকারীদেরও সাহায্য করবে
স্মার্ট মোজার আবিষ্কারক মিলবোটিক্স কোম্পানি। কোম্পানির একটি টিম লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের ‘দ্য ইউকে ডিমেনশিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট কেয়ার রিসার্চ ও টেকনোলজি সেন্টার’-এর সঙ্গে গবেষণা করছেন।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমে রোগীদের ভালো ওষুধ ও সেবা প্রদান করা সম্ভব। সেই সঙ্গে চিকিৎসককে ও পরামর্শকদের সঠিক তথ্য দিয়ে প্রযুক্তিটি সাহায্য করে। তারা রোগীর পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করতে পারে। ফলে চিকিৎসক রোগীর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।