জানুয়ারিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় মাত্র একটি গাড়ি বিক্রি করেছে বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি টেসলা। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ, উচ্চ দাম ও চার্জিং অবকাঠামোর অভাবে চাহিদা কম বলে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সিউলভিত্তিক গবেষক ক্যারিসিউ ও কোরিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের জুলাইয়ের পর কোম্পানিটির জন্য সবচেয়ে বাজে মাস ছিল জানুয়ারি। কারণ, ওই বছরের জুলাই মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় কোনো গাড়ি বিক্রি হয়নি।
ক্যারিসিউ বলছে, ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে কোরিয়ায় নিবন্ধিত নতুন ইভির (বৈদ্যুতিক গাড়ি) সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমে যায়।
গাড়ি নির্মাতারা দক্ষিণ কোরিয়ায় ইভি তৈরির জন্য উৎসাহ হারাচ্ছে। কারণ, উচ্চ সুদের হার ও মূল্যস্ফীতি গ্রাহকদের খরচে লাগাম টানতে প্ররোচিত করে। এ ছাড়া ব্যাটারিতে আগুন এবং ফাস্ট চার্জিং সেন্টারের অভাবও এই চাহিদা কমিয়ে দিচ্ছে।
জানুয়ারিতে টেসলার কম বিক্রি হওয়া ব্র্যান্ডের জন্য বড় পরিবর্তন নির্দেশ করে। কারণ, চীনে তৈরি মডেল ওয়াই গত বছর সর্বোচ্চ বিক্রীত পণ্যের অন্যতম।
জিওনবুক ইনস্টিটিউট অব অটোমোটিভ কনভারজেন্স টেকনোলজির প্রধান লি হ্যাং-কুর মতে, যাঁরা এই গাড়ি কিনতে ইচ্ছুক, তাঁরা এর মধ্যেই ইভি কিনেছেন এবং গাড়ির বাজারে বেশির ভাগ গ্রাহক এখন কিনতে চাইছেন না। চীনের সঙ্গে সংযোগের কারণেও টেসলার জনপ্রিয়তা কমেছে।
লি বলেন, ‘টেসলার গাড়ি কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করা বেশির ভাগ কোরিয়ান ইতিমধ্যে গাড়ি কিনে ফেলেছেন। টেসলার কিছু মডেল চীনে তৈরি হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু মানুষ কোম্পানিটির গাড়ি আর পছন্দ করছেন না। গ্রাহকেরা উৎপাদনের গুণমান নিয়েও উদ্বিগ্ন।
ব্লুমবার্গ নিউজকে দেওয়া এক বিবৃতিতে কোরিয়ায় টেসলারের একজন মুখপাত্র বলেন, গ্রাহকেরা ভর্তুকি পাওয়ার জন্য ইভি কিনতে দেরি করছেন।
এ ক্ষেত্রেও সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে টেসলা। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে কোম্পানিটি চীনের তৈরি মডেল ওয়ের বিক্রয়মূল্য ৫ কোটি ৬৯ লাখ ৯০ হাজার ওন (৪৩ হাজার ডলার) নির্ধারণ করে। এর ফলে এর দাম ৫৭০ লাখ ওনের মধ্যে চলে আসে। ফলে গ্রাহকেরা সরকারি ভর্তুকি পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন।
তবে গত মঙ্গলবার এই লেভেল ৫৫০ লাখ ওনে নামিয়ে আনা হয়। ফলে মডেল ওয়াইয়ে সরকারি ভর্তুকি অর্ধেক হয়ে যায়।