প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই সময়ে বৈদ্যুতিক জিনিসের ব্যবহার বাড়ছে। এই তালিকায় নতুন যুক্ত হতে চলেছে ই-সয়েল বা ইলেকট্রিক সয়েল। সুইডেনের লিংকোপিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা মাটিবিহীন চাষের জন্য একটি বৈদ্যুতিক পরিবাহীর মাধ্যমে কৃত্রিম মাটি তৈরি করেছেন। মনে করা হচ্ছে, মাটির মাধ্যমে বৈদ্যুতিকভাবে উদ্দীপ্ত করায় চারার বৃদ্ধি ভালো হয়। ই-সয়েল নিয়ে এরই মধ্যে প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
হাইড্রোপনিকস নামে পরিচিত এ পদ্ধতির মাধ্যমে কম শক্তির বৈদ্যুতিক উৎসের সঙ্গে ই-সয়েলকে যুক্ত করে মাটির চিরায়ত রূপ বদলে ফেলে সেলুলোজ বায়োপলিমারের সঙ্গে পিইডিওটি নামের পরিবাহী মিশিয়ে কৃত্রিম এ মাটি তৈরি করেছেন লিংকোপিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। গবেষণাগারে তৈরি করা এই মাটিতে পরীক্ষামূলকভাবে বার্লি চারা রোপণ করার পর প্রায় ৫০ শতাংশ চারা বড় হয়েছে।
হাইড্রোপনিকসের মাধ্যমে গাছপালা মাটি ছাড়াই বেড়ে ওঠে। এ ক্ষেত্রে পানি ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং শিকড়ের বিকাশের জন্য কৃত্রিম কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন হয়। এ জন্য আবদ্ধ ব্যবস্থায় প্রতিটি চারাকে খুব কম পানির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করা হয়।
হাইড্রোপনিকসের মাধ্যমে ভার্টিক্যাল বা উল্লম্ব পদ্ধতিতে চাষ করা সম্ভব। লিংকোপিং ইউনিভার্সিটির জৈব ইলেকট্রনিকস ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানী এলেনি স্ট্যাভরিনিডো এই গবেষণা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বিশ্বের জনসংখ্যা বাড়ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। বিদ্যমান কৃষি পদ্ধতি ব্যবহার করে পৃথিবীর সবার খাদ্যের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। হাইড্রোপনিকসের সাহায্যে আমরা শহরে খাদ্য উৎপাদন করতে পারি। এ ধরনের চাষাবাদে হাইড্রোপনিক স্তর হিসেবে ধানের তুষ, বালু, বেলে পাথরসহ নানা কিছু ব্যবহার করা হয়। মাটির বিকল্প হিসেবে এসব স্তরে গাছের শিকড় বিকশিত হয়। ই-সয়েল পদ্ধতিতে বৈদ্যুতিক পরিবাহীর মাধ্যমে হাইড্রোপনিকস চাষাবাদের বিশেষ সুযোগ তৈরি হয়েছে।
সূত্র: ফিজিকস ডট ওআরজি