দেশে বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, মহামারিসহ যেকোনো দুর্যোগে মানবিক সহায়তায় এগিয়ে আসেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। ফ্রিল্যান্সাররাও এর বাইরে নন। তাঁদের অনেকে ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন দাতব্য সংস্থায় সাধ্যমতো দান করেছেন। আবার কয়েকজন মিলে দল করে শুকনো খাবার, পানিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে ছুটে গেছেন বন্যাকবলিত এলাকায়। ফ্রিল্যান্সাররা জানিয়েছেন, মানুষের বিপদে পাশে থাকাটাই এখন বড় কাজ।
প্রখ্যাত ফ্রিল্যান্সার এবং কোডম্যান বিডির কর্ণধার মিনহাজুল আসিফ। তিনি তাঁর টিমের সদস্য এবং মেন্টরদের সঙ্গে মিলে বন্যাকবলিত এলাকায় মুড়ি, চিড়া, বিস্কুট, খেজুর, স্যালাইন, গুড় এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করেছিলেন। চট্টগ্রামের মিরসরাই এলাকায় দুর্গত ৫০০ পরিবারে এসব পণ্য পাঠিয়েছেন তাঁরা। পানি কমে যাওয়ার পর আসিফ তাঁর দল নিয়ে একই এলাকায় ত্রাণ কর্মসূচি চলমান রাখবেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর টিমের লোকজন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রাণ কর্মসূচিতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন।
সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ এবং তরুণ উদ্যোক্তা তানজিম শাহ কবীর ভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রত্যন্ত গ্রামে উদ্ধারকাজের জন্য বেশি দরকার স্পিডবোট। নৌকা বা সাধারণ নৌযানের স্রোতে টিকে থাকা কঠিন। সে কারণে তিনি নিজ উদ্যোগে ১০টি স্পিডবোটের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তাঁর মা যে স্কুলে শিক্ষকতা করেন, সেখানে আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছিল। সে আশ্রয়কেন্দ্রের প্রায় ৩০০ মানুষের ৩ দিনের খাবার এবং ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করেন তানজিম।
দলবল নিয়ে ফেনী ও কুমিল্লার দুর্গত এলাকার জন্য লক্ষাধিক টাকা সংগ্রহ করেছিলেন পাবনার বেড়া উপজেলার ফ্রিল্যান্সার আশরাফুজ্জামান পলাশ। সেই টাকায় পানি, ওষুধ, শুকনো খাবার কিনে ফেনী ও কুমিল্লার বন্যাপীড়িত এলাকায় বিতরণ করেন।
ফ্রিল্যান্সার শুভ আহমেদ ব্যক্তিগতভাবে সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠানে অর্থসহায়তা করেছেন। আবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বন্যার্ত মানুষের জন্য ওষুধ, শুকনা খাবার, স্যানিটারি ন্যাপকিন, শিশুখাদ্যসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করেছেন।
সিনথিয়া আক্তার লিজা ও নাজমুন নাহার। ফ্রিল্যান্সিংয়ের দুনিয়ায় বেশ পরিচিত দুজন। এই বন্যায় দুজনই ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন সংস্থায় অর্থ দান করেছেন।
জেসিআই প্রেসিডেন্ট এস এম বেলাল উদ্দীন ও তাঁর দল বন্যাদুর্গতদের উদ্ধার এবং খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।
মাইক্রোটার্সের কর্ণধার ফ্রিল্যান্সার নাজমুল হাসান তাঁর দল নিয়ে গিয়েছিলেন কুমিল্লার বুড়িচং ও রাজাপুর এলাকায়। ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি তিনি সেখানকার অবস্থা ভিডিওতে ধারণ করে ছড়িয়ে দিয়েছেন অনলাইনে। এগুলোর সুবিধা পেয়েছেন পরে সেসব এলাকায় যাওয়া ত্রাণ বিতরণকারীরা।
ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অর্থ সহায়তা দিয়ে বন্যার্তদের পাশে থেকেছেন ফ্রিল্যান্সার মেহেদী হাসান শুভ, ন্যাশনাল টেক অ্যাওয়ার্ড ২০২৩ বিজয়ী ফ্রিল্যান্সার জুনায়েদ খবির, ফ্রিল্যান্সার শামিম মাহতিম, মোহাম্মদ রেজওয়ান আহমেদ রাব্বি, রকি রায় প্রমুখ।