অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে জনপ্রিয় স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ‘অ্যাপল টিভি প্লাস’ অ্যাপ চালু করেছে বিশ্ববিখ্যাত প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান অ্যাপল। এটি অ্যাপলের জন্য একটি বিরল পদক্ষেপ। কারণ এর আগে তারা তাদের নিজস্ব অ্যাপ্লিকেশনগুলো শুধু আইওএস ডিভাইসে ব্যবহার করতে দিত।
এটি কোম্পানির জন্য সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। কারণ অ্যাপল প্ল্যাটফর্মে সম্প্রতি ‘সিলো’ এবং ‘সেভেরেন্স’ এর মতো জনপ্রিয় শোগুলি মুক্তি পেয়েছে, যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
ব্লুমবার্গ বলছে, ‘সেভেরেন্স’ সিরিজের দ্বিতীয় সিজনের প্রতি পর্ব তৈরিতে ২০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে অ্যাপল।
প্রযুক্তি বিশ্লেষক জ্যাকব বর্ন জানান, ‘সেভেরেন্স’ ও ‘সিলো’র মতো সিরিজগুলোর সাফল্য একটি নতুন বাজারের সন্ধান দিচ্ছে অ্যাপলকে। বিশেষ করে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের কাছে। আরও বেশি সাবস্ক্রাইবার সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে এটি অ্যাপলের জন্য বড় সুযোগ।
অ্যাপল তার বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা, যেমন আইক্লাউড, অ্যাপল কেয়ার ও বিজ্ঞাপন বিভাগগুলো থেকে আয় আরও বাড়াতে চায়। গত অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে অ্যাপলের সেবার আয় ১৪ শতাংশ বেড়ে ২৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
নতুন এই উদ্যোগ অ্যাপলের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো—স্ট্রিমিং খাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করা। যদিও অ্যাপল টিভি প্লাস এখন অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে ব্যবহার করা গেলেও এর বেশ কিছু ফিচার এখনো শুধু আইওএস ডিভাইসে ব্যবহার করা যাবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশি মানুষের কাছে আইফোন রয়েছে। তবে স্ট্যাটকাউন্টার অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে অ্যান্ড্রয়েডের মার্কেট শেয়ার ৭২ শতাংশ। অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ উন্মোচনের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হবে অ্যাপলের বাজার।
এদিকে, বিশ্বব্যাপী নেটফ্লিক্সের গ্রাহকসংখ্যা ৩০০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। তাই অ্যাপল টিভি প্লাস অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাপলও কিছু অতিরিক্ত অর্থ কামাতে চায়।
অ্যাপলের এই অ্যাপ ব্যবহারের জন্য প্রতি মাসে ৯ দশমিক ৯৯ ডলার খরচ করতে হবে, যা নেটফ্লিক্সের বিজ্ঞাপনসহ স্ট্যান্ডার্ড প্ল্যানের থেকে কিছুটা বেশি।
এ ছাড়া, গত মাসে অ্যাপল তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাপল টিভি প্লাসের ফ্রি ট্রায়াল চালু করেছিল, যা নতুন সাবস্ক্রাইবার আকর্ষণের উদ্দেশ্য ছিল। এর আগে অ্যাপটি শুধু আইওএস ডিভাইস, উইন্ডোজ এবং বিভিন্ন স্মার্ট টিভিতে ব্যবহার করা যেত।