ফিচার ডেস্ক
অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী মিশেল রোল্যান্ড ২১ নভেম্বর সংসদে ইতিহাস সৃষ্টিকারী এক আইন উত্থাপন করেছেন। এই আইন পাস হলে দেশটিতে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোরদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে।
এই বয়সীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিয়ে উদ্বিগ্ন অস্ট্রেলিয়ার প্রায় সব পরিবার। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, অনলাইনে সন্তানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা মা-বাবার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ কারণে সমস্যাটির দিকে বিশেষ নজর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ।
পার্লামেন্টে মিশেল রোল্যান্ড বলেন, ‘এই আইন পাস হওয়ার পরেও টিকটক, ফেসবুক, স্ন্যাপচ্যাট, রেডিট, এক্স ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে শিশু-কিশোরদের আটকাতে ব্যর্থ হলে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৫ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মতো বড় অঙ্কের জরিমানা গুনতে হবে।’
শুধু তা-ই নয়, সরকার থেকে জানানো হয়েছে, মা-বাবা তাঁদের শিশুসন্তানদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে সম্মতি দিলে তাঁদেরও ছাড় দেওয়া হবে না।
মিশেল রোল্যান্ড বলেছেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে একটি শিশু বড় হবে, সেটি অস্ট্রেলিয়ার সামাজিক বৈশিষ্ট্য নয়। তাই আইন পাসের মধ্য দিয়ে নতুন এক মূল্যবোধ সবার মধ্যে তৈরি হবে।’
অস্ট্রেলিয়ার এমন সিদ্ধান্তকে ভিন্নভাবে দেখেছেন ইলন মাস্ক। তিনি বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার এমন পদক্ষেপের কারণ সাধারণ নাগরিকদের ইন্টারনেট ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল মনে হচ্ছে।’
পার্লামেন্টে এই আইন পাস হওয়া নিয়ে কারও তেমন আর সংশয় নেই। কারণ, দেশটির জনগণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। আইনটি পাস হওয়ার পর প্ল্যাটফর্মগুলো প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য এক বছর সময় পাবে।
মিশেল রোল্যান্ড বলেন, ‘তরুণদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ানদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মাদক সংগ্রহ করে এবং বিভিন্ন সহিংস কনটেন্ট দেখে থাকে। এ ছাড়া এক-চতুর্থাংশ বিজ্ঞাপন দেখে অনিরাপদ খাদ্যাভ্যাসের দিকে ঝুঁকছে।’
১৬ বছরের কম বয়সীদের সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির শিশুকল্যাণ ও ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের আশঙ্কা, এরই মধ্যে তরুণেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের যে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে, এই আইন তা বিচ্ছিন্ন করবে।
সূত্র: এপি