Ajker Patrika
হোম > প্রযুক্তি

ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডের ষষ্ঠ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীদের দল অ্যাপোক্যালিপস। দলের সদস্যরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আহম্মেদ, জিশানুল ইসলাম ও সাহিদ হোসেন। দলটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানিয়েছেন জুবায়ের আহম্মেদ

যাত্রা শুরু
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সেমিস্টার থেকেই বন্ধুত্ব সাদিয়া, সাহিদ ও জিশানুলের। সহশিক্ষা কার্যক্রম বা ক্লাবিংয়ের মাধ্যমেই তাঁদের পরিচয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে প্রজেক্ট কোর্স করার সময় নিজেরাই একটি প্রজেক্ট তৈরির কথা ভাবেন তাঁরা। ২০২১ সালে প্রথম এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস নিয়ে একটি প্রকল্প তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরস্কার লাভ করেন তিন বন্ধু। সে সময় তাঁরা একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছিলেন, যা শিক্ষার্থীদের এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করত। সেই ছিল অ্যাপোক্যালিপসের শুরু।

বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রভাষক তারেক হাসান তিন বন্ধুকে ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করেন। তখন অলিম্পিয়াডের বাকি ছিল এক সপ্তাহ। অংশ নিতে হুট করেই ব্লকচেইনচর্চা শুরু করেন তাঁরা। শুরু হয় প্রতিযোগিতার জন্য আইডিয়া খোঁজার পালা। এ সময় তাঁরা খুঁজে পান মেধাস্বত্ব বা বৃদ্ধিভিত্তিক সম্পদ নিয়ে কাজ করার ধারণা। অ্যাপোক্যালিপসের সাদিয়া জানান, বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে তাঁরা টের পান, এখানে কাজ করার অনেক কিছু আছে। একটা পেটেন্ট বা ট্রেডমার্ক করতে ১৮ থেকে ৩০ মাস সময় লেগে যায়। পেটেন্ট দেখার সুযোগের ক্ষেত্রেও অনেক সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্যই অ্যাপোক্যালিপস ব্লকচেইনের ভিত্তিতে এই মেধাস্বত্ব নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হয়।

আইপি ব্লকচেইন প্রো
আইপি ব্লকচেইন প্রো অ্যাপোক্যালিপসের বানানো ব্লকচেইনভিত্তিক একটি সফটওয়্যার। এর মাধ্যমে খুব কম সময়ে, সহজে ও নিরাপদে পেটেন্ট রেজিস্টার করা যাবে। এতে তথ্য চুরি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পেটেন্ট বা ট্রেডমার্ক পাওয়া যাবে। জিশান জানান, আবেদনের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল হওয়ায় সাধারণত মানুষ পেটেন্টের জন্য নিজেরা আবেদন করতে পারে না। অ্যাপোক্যালিপস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে একটি ইকোসিস্টেম তৈরি করেছে যাতে একজন ব্যবহারকারী বা গবেষক খুব সহজে নিজে পেটেন্ট করতে পারবেন। ধাপে ধাপে তথ্য পূরণের মাধ্যমেই আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে।

ব্লকচেইন কী
ব্লকচেইন হলো একধরনের ডিজিটাল লেজার টেকনোলজি, যা তথ্য রেকর্ড করে। এই টেকনোলজি সবার জন্য উন্মুক্ত। আমাদের চারপাশের সবকিছুই কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। ব্লকচেইন বিকেন্দ্রীকরণে বিশ্বাস করে। এখানে একক কোনো ব্যক্তি সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ না করে অনেকগুলো কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে ডেটা চুরির সুযোগ নেই। সাতোশি নাকামোটো ছদ্মনামে এক ব্যক্তি ব্লকচেইনের ধারণা তৈরি করেন।

জাতীয় আসরে 
ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্যায়ের রাউন্ড গত জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দলটি সিলভার অ্যাওয়ার্ড পায়। জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগীদের ১০ মিনিটের ভিডিও, পিচ ডেক ও পেপার জমা দিতে হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতার সময় অ্যাপোক্যালিপসের সদস্যদের মিড টার্ম পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষ করে টানা ৩২ ঘণ্টা না ঘুমিয়ে প্রকল্প জমা দিয়েছেন তাঁরা।

আন্তর্জাতিক আসরে
১৫ থেকে ১৭ নভেম্বর নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডের ষষ্ঠ আসর। যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, হংকং, ভারত, বাংলাদেশসহ ১৯টি দেশ ও ইউরোপ অঞ্চলের প্রায় ৫০টি দল এবার অংশ নেয়। বাংলাদেশ থেকে মোট ১১টি দল আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে আমন্ত্রণ পেলেও ভিসা-জটিলতায় শেষ পর্যন্ত নেদারল্যান্ডস পৌঁছাতে পেরেছিল মাত্র ৫টি দল। ৪টি দল অনলাইনে যুক্ত ছিল। প্রতিযোগিতায় অ্যাপোক্যালিপসের প্রকল্পটির নাম ছিল ‘আইপি ব্লকচেইন প্রো’। এবারের বিশ্ব আসরের আয়োজক ছিল হল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস। প্রকল্পের প্রভাব, বিশ্বস্ততা ও বাণিজ্যিক বাস্তবায়নের সক্ষমতা—এই তিনটি বিষয় বিবেচনা করে চ্যাম্পিয়ন দল ঘোষণা করা হয়।   

ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন
নভেম্বর মাসের ১৬ তারিখ একজন মডারেটরের মাধ্যমে সব কটি দল নিয়ে একটি ডিসকাশন রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রজেক্টের মাধ্যমে কোন সমস্যা সমাধান করা হয়েছে, তা আলোচনা করা হয়। ১৭ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৮টা থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। অ্যাপোক্যালিপসের প্রজেক্ট বা প্রকল্পটি নিয়ে বিচারকদের সামনে একটি পোস্টার প্রেজেন্টেশন দিতে হয়। পাশাপাশি দর্শক এবং বিচারকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দিতে হয়েছে।

এসবের ওপর ভিত্তি করে সেরা পাঁচ নির্বাচন করা হয়। পরে সেরা পাঁচটি দল সবার সামনে পিচ বা প্রেজেন্টেশন দেয়। টিম অ্যাপোক্যালিপসকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। অ্যাপোক্যালিপসের অন্যতম সদস্য সহিদ বলেন, ‘আমরাই সবার শুরুতে প্রেজেন্টেশন দিয়েছিলাম। খুব দ্রুত আমাদের কাজ করতে হয়েছে। আমি হংকংয়ের দলগুলো দেখে বেশি অবাক হয়েছি। ওদের ১৪ বছর বয়সী একজন প্রতিযোগী ছিল। তার ব্লকচেইন নিয়ে যে জ্ঞান দেখলাম, তা অবিশ্বাস্য।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা 
ফাইনালে জেতার পুরস্কার হিসেবে অ্যাপোক্যালিপস ২ হাজার ৪০০ ইউরো প্রাইজমানি পেয়েছে। এই অর্থ দিয়ে দলটির সদস্যরা সফটওয়্যারটির আরও উন্নয়ন করতে চান। পাশাপাশি দেশে ব্লকচেইনভিত্তিক সফটওয়্যারের প্রসার ঘটাতে চায় অ্যাপোক্যালিপস।

লাইভ লোকেশন শেয়ারসহ নতুন ৪ ফিচার আসছে অ্যান্ড্রয়েডে

সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে ৫২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকি আইন বাতিল চান ট্রাম্প

নতুন চিপের আইপ্যাড এয়ার ও ম্যাজিক কিবোর্ড নিয়ে এল অ্যাপল

হোয়াটসঅ্যাপে রেজল্যুশন ঠিক রেখে ছবি ও ভিডিও পাঠানোর উপায়

বাংলাদেশ স্যাটেলাইটের সম্প্রচার ৭ দিন ব্যাহত হতে পারে

চিকিৎসকের সহকারী হবে মাইক্রোসফটের ড্রাগন কো-পাইলট

টিকটক কিনতে আগ্রহীদের তালিকায় যুক্ত হলেন রেডিটের সহপ্রতিষ্ঠাতা

দেশজুড়ে ওপেনসোর্স চিপের ব্যবহার বাড়াতে নীতিমালা করছে চীন

চলতি সপ্তাহেই আসছে অ্যাপলের নতুন ম্যাকবুক এয়ার, থাকবে এম৪ চিপ

ইন্টেলের প্রযুক্তিতে চিপ উৎপাদন করবে এনভিডিয়া–ব্রডকম, সক্ষমতা যাচাই চলছে