বিদায়ের আগে তড়িঘড়ি করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চিপ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের বিধি জারি করা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পখাতের শীর্ষ সংগঠন ইনফরমেশন টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি কাউন্সিল (আইটিআই)। এই পদক্ষেপ বিশ্ব বাজারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য খর্ব করতে পারে বলে গতকাল মঙ্গলবার সংস্থাটি সতর্ক করেছে।
আমাজন, মাইক্রোসফট ও মেটার মতো বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো আইটিআইয়ের সদস্য। তারা বলছে, নতুন এই বিধি মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য বিদেশে কম্পিউটিং সিস্টেম বিক্রির সুযোগ সীমাবদ্ধ করবে। বিশ্ববাজার দখল করবে চীনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো।
গত মাসে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তরের পরিকল্পনা হলো বিশ্বব্যাপী এআই চিপ রপ্তানিতে অনুমোদন দেওয়া। তবে সেই চিপগুলো যাতে খারাপ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত না হয়, সেদিকে নজর রাখা। এদিকে এই বিধিনিষেধের প্রধান লক্ষ্য হলো, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে চীনকে তার সামরিক ক্ষমতা শক্তিশালী করতে না দেওয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যসচিব গিনা রাইমন্ডোকে পাঠানো এক চিঠিতে প্রশাসনের এই দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতি আপত্তি জানিয়েছেন আইটিআইয়ের সিইও জেসন অক্সম্যান। তিনি বলেন, ‘এমন একটি জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ বিধি খুব দ্রুত চালু করলে তা এআই খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক নেতৃত্বের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।’
আইটিআইয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক প্রচেষ্টাকে সম্মান জানাই। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক নেতৃত্বের জন্য এই বিধির প্রভাব গুরুতর হতে পারে এবং তা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত।’
এ ধরনের বিধি প্রথমে একটি ‘প্রস্তাবিত নিয়ম’ হিসেবে প্রকাশ করা উচিত বলে দাবি করে সংস্থাটি। কারণ এই বিধির ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব ব্যাপক।
তবে এ বিষয়ে বাণিজ্য দপ্তর বা হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে প্রযুক্তি খাতের প্রতিবাদ বাড়ছে। গত সোমবার একটি বিবৃতি দিয়েছে সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনও। এ ছাড়া, ওরাকলের নির্বাহী সহসভাপতি কেন গ্লিউক গত রবিবার এক ব্লগ পোস্টে বলেছেন, এই বিধি ‘বিশ্বব্যাপী কমার্শিয়াল বা বাণিজ্যিক ক্লাউড কম্পিউটিং শিল্পের ওপর একটি বৃহত্তম নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে, যা ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঘটবে।’
তিনি আরও বলেন, এই বিধি ‘এআই ডিফিউশন এক্সপোর্ট কন্ট্রোল ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে পরিচিত এবং এটি মার্কিন প্রযুক্তিশিল্পের জন্য সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক বিধি হিসেবে চিহ্নিত হবে।’
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে চীনের ১৪০টি কোম্পানির জন্য চিপ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।