টেলিগ্রাম অ্যাপের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও পাভেল দুরভ অবশেষে কিছুদিনের জন্য ফ্রান্স ছাড়ার অনুমতি পেয়েছেন। গত বছরের আগস্টে প্যারিসের লো বোর্গেট বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি এবার দুবাই ফিরে গেছেন।
ফ্রান্সে গ্রেপ্তারের পর তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের আওতায় নেওয়া হয়, যা টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত। আটকের পর ৫০ লাখ ইউরোর জামিনে মুক্তি পেলেও তাঁর জামিনের শর্ত ছিল, তিনি ফ্রান্সের বাইরে যেতে পারবেন না। তবে সম্প্রতি জামিনের শর্ত শিথিল করে তাঁকে কিছুদিনের জন্য দেশত্যাগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
টেলিগ্রামে এক বার্তায় দুরভ জানান, ‘ফ্রান্সে কয়েক মাস থাকার পর আমি দুবাই ফিরে এসেছি। টেলিগ্রামে সংঘটিত একটি অপরাধী কার্যকলাপের কারণে পরিচালিত তদন্তের অংশ ছিল এটি। তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে, তবে বাড়ি ফিরে ভালো লাগছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি তদন্তকারী বিচারকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাঁরা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। সেই সঙ্গে কঠোর প্রচেষ্টার জন্য আমার আইনজীবী এবং টিমকেও ধন্যবাদ জানাই। তারা প্রমাণ করেছে যে, টেলিগ্রাম কখনোই তার আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়নি।
এক প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি জানায়, কয়েক দিন আগে বিচারক তাঁর জামিনের শর্ত শিথিল করে তাঁকে কয়েক সপ্তাহের জন্য ফ্রান্স ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেন। এই শর্ত ১৫ মার্চ থেকে আগামী ৭ এপ্রিল পর্যন্ত শিথিল রয়ে২০১৩ সালে টেলিগ্রাম অ্যাপটি চালু করেন দুরভ। বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার সক্রিয় ব্যবহারকারী সংখ্যা ৯০ কোটিরও বেশি। টেলিগ্রামের মডারেশন পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৫ সালে তারা ৬১ লাখেরও বেশি গ্রুপ এবং চ্যানেল বন্ধ করেছে, যার মধ্যে ১ লাখ ৬০ হাজার শিশু যৌন নির্যাতন সম্পর্কিত কনটেন্ট এবং ৫৭ হাজার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত কমিউনিটি রয়েছে।
গত বছর তাঁর আটক হওয়ার পর থেকে দুরভ বলেছেন, ‘টেলিগ্রামের স্বাধীনতা, গোপনীয়তা এবং মুক্তির কারণে অনেকেই আমাদের প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ ‘#FreePavel’ হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে তাঁর মুক্তির জন্য সমর্থন জানিয়েছিলেন ইলন মাস্ক।’
২০২১ সালে দুরভকে ফরাসি নাগরিকত্ব প্রদান করার সিদ্ধান্তের সমর্থন জানিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, এটি ছিল সেই ব্যক্তিদের প্রতি একটি কৌশলগত পদক্ষেপ, যাঁরা বিশ্বমঞ্চে উজ্জ্বল অবদান রেখে চলেছেন।
দুরভের ওপর ফরাসি তদন্তকারীরা শিশু নির্যাতন, মাদকদ্রব্য, প্রতারণা, অস্ত্র বিক্রি ও ভাড়াটে খুনিদের নিয়োগের মতো একাধিক অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান