নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইওমিং অঙ্গরাজ্যে ‘ন্যাট্রিয়াম পারমাণবিক চুল্লি’ স্থাপন করবেন দুই শীর্ষ মার্কিন বিলিয়নিয়ার বিল গেটস ও ওয়ারেন বাফেট। আকারে ছোট উন্নত প্রযুক্তির এসব পারমাণবিক চুল্লিতে প্রচলিত চুল্লির চেয়ে কিছুটা ভিন্ন প্রকৃতির জ্বালানি ব্যবহার করা হবে।
গেটসের জ্বালানি প্রতিষ্ঠান টেরাপাওয়ার ও বাফেটের প্যাসিফিকরপের যৌথ উদ্যোগ এসব ন্যাট্রিয়াম চুল্লি বসানো হবে। ওয়াইওমিংয়ের কোথায় এ পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন করা হবে, তার বিস্তারিত বিবরণ চলতি বছরের শেষের দিকে ঘোষণা করা হবে বলে গত বুধবার এক যৌথ বিবৃতি জানায় কোম্পানি দুটি।
এসব ন্যাট্রিয়াম চুল্লিকে কার্বনমুক্ত জটিল প্রযুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। কারণ, এখানে জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়াম বা প্লুটোনিয়ামের সঙ্গে মাঝেমধ্যে সৌর বা বায়ুবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হবে। তাই এটা খানিকটা পরিবেশবান্ধব হবে বলেও আশা করা হচ্ছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিল গেটস বলেন, ‘ন্যাট্রিয়াম চুল্লি জ্বালানি শিল্পের চেহারা বদলে দেবে।’
ন্যাট্রিয়াম চুল্লির প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য গত বছর মার্কিন জ্বালানি মন্ত্রণালয় টেরাপাওয়ারকে প্রাথমিকভাবে ৮ কোটি ডলার অনুদান দেয়। ভবিষ্যতেও টেরাপাওয়ারকে এমন আরও অনুদান দেওয়ার কথা রয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের।
ন্যাট্রিয়াম চুল্লি বসাতে প্রাথমিকভাবে ১০০ কোটি ডলার ব্যয় হবে বলে গত বছর জানিয়েছিল টেরাপাওয়ার। সব ঠিক থাকলে, এই চুল্লি থেকে পাওয়া ‘পরিবেশবান্ধব’ বিদ্যুৎ ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটির পাওয়ার গ্রিডে যুক্ত করা যাবে বলে জানান টেরাপাওয়ারের প্রধান নির্বাহী পরিচালক ক্রিস লেভেস্ক।
এদিকে টেরাপাওয়ারের উদ্যোগ পরিবেশবান্ধব হওয়ার দাবি সত্ত্বেও এসব উন্নত চুল্লির ফলে ইউরেনিয়াম সহজলভ্য হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তা ছাড়া এসব চুল্লিতে যেসব ইউরেনিয়াম ব্যবহার করা হবে, তা প্রচলিত পারমাণবিক চুল্লির চেয়ে অনেক বেশি সমৃদ্ধ। এ অবস্থায় বিভিন্ন জঙ্গি গ্রুপের হাতে ইউরেনিয়াম ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর তা দিয়ে তারা যেনতেনভাবে ‘অপরিশোধিত’ পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে।