অনলাইন ডেস্ক
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির নির্মাতা ওপেনএআই ও কোম্পানিটির সিইও স্যাম অল্টম্যানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নিচ্ছেন ইলন মাস্ক। যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন বলছে, ওপেনএআই মাস্কের কিছু ইমেইল ফাঁস করায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই বিলিয়নিয়ার।
গতকাল মামলাটি ক্যালিফোর্নিয়ার রাজ্য আদালতকে খারিজ করতে বলেছেন মাস্কের আইনজীবীরা। সান ফ্রান্সিসকো সুপিরিয়র কোর্টে করা মামলাটি খারিজের বিষয়ে আজ বুধবার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়ছিল, ২০১৫ সালে ওপেনএআই প্রতিষ্ঠার সময় কোম্পানিটিকে সাহায্য করেন মাস্ক। প্রতিষ্ঠানটি অলাভজনক হবে বলে মাস্কের সঙ্গে চুক্তি ছিল। তবে চ্যাটজিপিটি জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর এই চুক্তি লঙ্ঘন করে কোম্পানিটি। চ্যাটবটটির কিছু বিশেষ ফিচার ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীদের অর্থ দিতে হয়।
মামলার রায় মাস্কের পক্ষে গেলে স্যাম অল্টম্যান, সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি গ্রেগ ব্রকম্যান এবং ওপেনেআইকে ব্যবসা থেকে প্রাপ্ত লাভ ফেরত দিতে হতো।
মাস্কের দাবিকে ‘অসংলগ্ন’ ও ‘অর্থহীন’ বলে অভিহিত করে মামলাটি খারিজ করার জন্য আদালতে আবেদন করে ওপেনএআই। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের মাস্কের বেশ কয়েকটি ইমেইল এক ব্লগ পোস্টে প্রকাশ করে কোম্পানিটি। ইমেইল দেখা যায়, এআই প্রযুক্তি নিয়ে নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য কোম্পানিটির প্রচুর অর্থ উপার্জনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে স্বীকার করেন মাস্ক। এসব ইমেইল মাস্কের মামলার অভিযোগে বিপরীত তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
তবে মামলাটি খারিজ করার কারণ প্রকাশ করেননি মাস্কের আইনজীবীরা। মামলাটি খারিজের এক দিন আগেই নিজের কোম্পানি থেকে অ্যাপলের সব ডিভাইস নিষিদ্ধ করার হুমকি দেন মাস্ক। কারণ কোম্পানিটির পণ্যে ওপেনএআইয়ের প্রযুক্তি ব্যবহার করার ঘোষণা দিয়েছে অ্যাপল।
এক্সের পোস্টে মাস্ক বলেন, যদি আইওএসের (অ্যাপলের অপারেটিং সিস্টেমে) সঙ্গে ওপেনএআই যুক্ত করে, তাহলে তা কোম্পানি থেকে অ্যাপলের ডিভাইস নিষিদ্ধ করা হবে।
মাস্ক অভিযোগ করেন, ‘সর্বোচ্চ লাভের’ জন্য ওপেনএআই শক্তিশালী ‘আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টিলিজেন্স’ তৈরি করছে। অন্যদিকে ওপেনএআই বলছে, মাস্ক এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত নন, তাই হিংসা থেকে এসব কাজ করছেন। ২০১৮ সালে ওপেনএআই থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর টেসলার সহপ্রতিষ্ঠাতাদের এটি অধিগ্রহণ করার জন্য রাজি করাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
ওপেনএআই মাস্কের দাবিকে ‘কল্পনা’ বলে অভিহিত করলেও তিনিই একমাত্র ব্যক্তি নন, যিনি ওপেনএআইয়ের নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ঝুঁকি সম্পর্কে পরিচালনা বোর্ডের বেশ কয়েকজন সদস্যের উদ্বেগের কারণে গত বছর স্যাম অল্টম্যানকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। তবে ওপেনএআইয়ের প্রধান বিনিয়োগকারী মাইক্রোসফটের হস্তক্ষেপে কয়েক দিন পরেই স্যাম অল্টম্যান নিজের অবস্থানে ফিরে আসেন।
সম্প্রতি ওপেনএআই থেকে পদত্যাগ করেন এআই সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। তাঁরা দাবি করেন, এআই নিয়ে ঝুঁকি ঠিকমতো পর্যবেক্ষণ না করেও দ্রুত নতুন পণ্য বাজারে নিয়ে আসছে ওপেনএআই। সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য এর কয়েক সপ্তাহ পরেই নতুন কমিটি তৈরি করে ওপেনএআই।