হোম > প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রে এআই মডেল থেকে ‘আদর্শিক পক্ষপাত’ দূর করার নির্দেশ বিজ্ঞানীদের

অনলাইন ডেস্ক

এআই মডেলগুলোতে রাজনৈতিক পক্ষপাত লিবারেল ও কনজারভেটিভ উভয়কেই প্রভাবিত করতে পারে। ছবি: মিডিয়াম

যুক্তরাষ্ট্রের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সেফটি ইনস্টিটিউটের (এআইএসআই) অংশীদারির মধ্যে থাকা বিজ্ঞানীদের জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেকনোলজি (এনআইএসটি)। নতুন শর্তাবলিতে গবেষকদের কাজের ক্ষেত্র থেকে ‘এআই নিরাপত্তা’, ‘দায়িত্বশীল এআই’ ও ‘এআই ন্যায্যতা’ বিষয়গুলো বাদ দেওয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে এখন ‘আদর্শিক পক্ষপাত কমানো’ ও ‘মানব সমৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির’ ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশিকাটি আপডেটেড কো–অপারেটিভ রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট চুক্তির অংশ হিসেবে এসেছে, যা মার্চ মাসের শুরুতে এআই সেফটি ইনস্টিটিউট কনসোর্টিয়াম সদস্যদের পাঠানো হয়েছিল। এর আগে ওই চুক্তি গবেষকদের এমন প্রযুক্তিগত কাজে অবদান রাখতে উৎসাহিত করেছিল, যা কোনো এআই মডেলের লিঙ্গ, জাতি, বয়স বা ধনসম্পত্তির বৈষম্য সম্পর্কিত আচরণ শনাক্ত করতে ও তা সংশোধন করতে সাহায্য করবে। এ ধরনের বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এগুলো সরাসরি ব্যবহারকারীদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং সংখ্যালঘু ও অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল গোষ্ঠীগুলোর ওপর বৈষম্যমূলক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে নতুন চুক্তিতে এসব বিষয় আর অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

নতুন চুক্তিতে ‘কনটেন্ট অথেনটিকেশন বা যাচাই–বাছাই’, ‘উৎস ট্র্যাক করার জন্য টুল তৈরি করা’ ও ‘সিনথেটিক কনটেন্ট চিহ্নিতকরণ’ বিষয়গুলো বাদ দেওয়া হয়েছে, যা মিথ্যা তথ্য ও ডিপফেক শনাক্ত করার প্রতি কম আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়। এ ছাড়া এতে ‘যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক এআই অবস্থান শক্তিশালী করার’ বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য একটি গবেষক দলকে পরীক্ষামূলক টুল তৈরি করতে বলা হয়েছে।

এআইএসআইয়ে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গবেষক বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন এআইয়ের জন্য নিরাপত্তা, ন্যায্যতা, মিথ্যা তথ্য ও দায়িত্ববোধ—এসব বিষয়কে মূল্যবান বলে মনে করে না এবং এই নির্দেশিকা অনেক কিছু বলে দেয়।

আরেক গবেষক জানিয়েছেন, এটা একেবারেই অদ্ভুত, ‘মানব সমৃদ্ধি’ বলতে আসলে কী বোঝায়? তাঁরা উল্লেখ করেছেন, এই পরিবর্তনগুলো এআই মডেলগুলোর ব্যবহারে আরও বৈষম্য, নিরাপত্তাহীনতা ও দায়িত্বহীনতা তৈরি করতে পারে।

বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে সরকারি ব্যয় ও প্রশাসনিক জটিলতা কমানোর বিতর্কিত প্রচেষ্টা পরিচালনা করছেন ইলন মাস্ক। একসময় তিনি ওপেনএআই ও গুগলের এআই মডেলগুলোকে সমালোচনা করেছেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে এক্সে একটি মিম পোস্ট করেন ইলন মাস্ক, যেখানে জেমিনি ও ওপেনএআইকে ‘বর্ণবাদী’ ও ‘ওক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।

‘ওক’ শব্দটি মূলত ১৯৬০-এর দশকের আফ্রিকান-আমেরিকান সংস্কৃতি থেকে এসেছে, যেখানে এটি ছিল ‘জাগ্রত’ বা ‘সচেতন’ থাকার একটি প্রতীক।

তবে বর্তমানে শব্দটি অনেক সময় নেতিবাচক অর্থে ব্যবহার হচ্ছে। কিছু লোক ‘ওক’ শব্দটি ব্যবহার করেন সামাজিক বা রাজনৈতিক বিষয়গুলোতে অতিরিক্ত সচেতনতার সমালোচনা করতে।

টেসলা ও স্পেসএক্সের পাশাপাশি এক্সএআই নামের একটি এআই কোম্পানি রয়েছে মাস্কের। এটি সরাসরি ওপেনএআই ও গুগলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে। এদিকে এক্সএআইয়ের একজন গবেষক সম্প্রতি একটি নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেছেন, যা সম্ভবত লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলগুলোর রাজনৈতিক পক্ষপাত পরিবর্তন করতে সহায়তা করতে পারে।

গবেষণায় দেখা যায়, এআই মডেলগুলো রাজনৈতিক পক্ষপাত লিবারেল ও কনজারভেটিভ উভয়কেই প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২১ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুযায়ী, টুইটারের রিকমেনডেশন অ্যালগরিদমের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের অধিকাংশ সময় ডানপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি দেখানো হচ্ছিল।

জানুয়ারি থেকে মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডজ) যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন বিভাগে পরিবর্তন এনেছে। এই বিভাগ সরকারি কর্মচারীদের বরখাস্ত ও বিভিন্ন ব্যয় স্থগিত করছে এবং এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধী ব্যক্তিদের শত্রুভাবাপন্ন বলে মনে হচ্ছে। কিছু সরকারি বিভাগ, যেমন ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন, ডিইআই সম্পর্কিত দলিলগুলো আর্কাইভ থেকে মুছে ফেলেছে। সম্প্রতি সেফটি ইনস্টিটিউটের মূল সংস্থাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ডজ, যার ফলে বেশ কিছু কর্মচারী বরখাস্ত হয়েছেন।

এই পরিবর্তনগুলো সরাসরি হোয়াইট হাউসের নির্দেশে এসেছে বলে জানিয়েছেন অলাভজনক সংস্থা ‘এলিউথার’-এর নির্বাহী পরিচালক স্টেলা বিডারম্যান। তিনি বলেন, ‘এই প্রশাসন তাদের অগ্রাধিকার স্পষ্ট করেছে। স্টেলা মনে করেন, পরিকল্পনাটি নতুন করে লেখা প্রয়োজন ছিল, যাতে এআইএসআই টিকে থাকতে পারে এবং প্রশাসনের নির্ধারিত অগ্রাধিকার অনুসারে কাজ চালিয়ে যেতে পারে।

বাইডেন প্রশাসন গত অক্টোবরে এআই সেফটি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছিল। দ্রুত অগ্রসরমাণ এআই প্রযুক্তির সম্ভাব্য বিপদগুলো মোকাবিলার জন্য সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তবে গত জানুয়ারিতে বাইডেনের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। পরে এই ইনস্টিটিউটকে চালু রাখে ট্রাম্প প্রশাসন এবং নতুন নির্বাহী আদেশে ‘এআই সিস্টেমগুলোকে আদর্শিক পক্ষপাত ও কৌশলগত সামাজিক এজেন্ডা থেকে মুক্ত’ রাখতে বলা হয়।

তথ্যসূত্র: ওয়্যারড

ক্রোম ও অ্যান্ড্রয়েডে গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করবেন যেভাবে

মাইক্রোসফটের সঙ্গে চুক্তি শেষ, হুয়াওয়ের নতুন পিসিতে থাকবে কোন অপারেটিং সিস্টেম

এআই আনল চীনা সার্চ জায়ান্ট বাইদু, খরচ ডিপসিকের অর্ধেক

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের জায়গায় আসছে ‘জেমিনি’

হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করবেন যেভাবে

চাকরির অনলাইন সাক্ষাৎকারে এআই দিয়ে প্রতারণা করছে প্রার্থীরা

ওপেনএআইকে লাভজনক কোম্পানিতে রূপান্তরের বিতর্ক, দ্রুতবিচারে রাজি মাস্ক–অল্টম্যান

ফেসবুকে ফ্যাক্টচেকের পরিবর্তে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে কমিউনিটি নোটস

চীনা মানুস বনাম মার্কিন চ্যাটজিপিটি: এআই আধিপত্যের লড়াইয়ে কে এগিয়ে

ইন্টেলের নতুন সিইওর বেতন কত