মইনুল হাসান, ফ্রান্স
জীবজগতে উদ্ভিদকেই অনেক বেশি স্মার্ট বলা চলে। কারণ শুধু নিজের খাবারই নয়, অন্যের খাবারও তৈরি করে প্রায় সব প্রাণীর প্রাণ বাঁচিয়ে রাখছে এই উদ্ভিদ। এরা সূর্যের আলো থেকে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় শক্তি ধরে রাখে এবং সেই শক্তি নানা রকম খাবারের মাধ্যমে প্রাণিদেহে পৌঁছে দেয়। ‘অক্সিজেনের কারখানা’ সে সুখ্যাতিও উদ্ভিদকে দিতে হয়। এদের অন্য সব দক্ষতা ও গুণের কথা লিখে আসল কথা থেকে অনেকখানি দূরে সরে যাওয়া হবে।
যে উদ্ভিদের কথা বলা হচ্ছে, তা সূর্যের আলোয় সালোকসংশ্লেষণে অর্থকরী ফসল উৎপাদন করবে না। অনেকটা উদ্ভিদকে অনুকরণ করে মানুষের তৈরি এই উদ্ভিদ বেশ দক্ষতায় দ্রুত উৎপাদন করবে। এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের ‘সোলার-বোটানিক ট্রি’ নামের প্রতিষ্ঠানটি। আর্থসামাজিক অগ্রগতি ও জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বিদ্যুতের খুব একটা বিকল্প আজও নেই।
সেদিকে খেয়াল রেখেই সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ প্রতিষ্ঠানটি সূর্যের আলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম এমন গাছ উৎপাদনে তৎপর হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ২০০টি উদ্ভিদ বিশেষ ক্রেতার জন্য তাদের কারখানায় মজুত করেছে।
দিনে ৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম একটি মাত্র গাছ বাড়ির আঙিনায় স্থাপন করলে তিন কক্ষের বাড়ির জন্য নীরবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করে যাবে। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ মূল গ্রিডে বিক্রি করারও ব্যবস্থা থাকছে। বৈদ্যুতিক গাড়িতে স্বল্প সময়ে পর্যাপ্ত জ্বালানি জমা করবে এ উদ্ভিদ।
প্রাকৃতিক উদ্ভিদের মতো সবুজ না হলেও, পরিবেশবান্ধব, নবায়নযোগ্য ‘সবুজ জ্বালানি’ বা গ্রিন অথবা ক্লিন এনার্জি উৎপাদনে সক্ষম এমন উদ্ভিদ সাধারণের জন্য বাজারে আসছে আগামী বছর।
আরও কিছু প্রতিষ্ঠান একই রকম গবেষণা এবং কাজে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তারা সবাই একমত যে এ গাছ হবে অনেকটা টাকার গাছের মতো। তবে তাতে হাজার টাকার হাজার হাজার নোট না ধরলেও, এমন একটি গাছ থাকলে অনেক অর্থ সাশ্রয় হবে।
জ্বালানি-সংকটের এমন দুঃসময়ে তাঁরা দিনরাত নাগরিকদের জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময়, সুখকর করতে চাইছেন, তাঁরা নগরের বিভিন্ন স্থানে এমন ‘স্মার্ট তরু’ রোপণের জন্য উৎসাহী হচ্ছেন। তাই পরিবেশরক্ষায় প্রাকৃতিক উদ্ভিদের সঙ্গে বাড়িঘরের উঠোনে, শিল্পকারখানার আঙিনায়, নগর-বন্দরে দেখা যাবে স্মার্ট উদ্ভিদ।