মেহরাব মাসাঈদ হাবিব
সম্প্রতি মারা গেলেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ব্রিটেনের ইতিহাসে তিনিই বেশি সময় ধরে সিংহাসনে ছিলেন। প্রযুক্তি ও উন্নত বিশ্বের বিকাশ তিনি দেখেছেন নিজের চোখে। ১৯৫২ সালে সিংহাসনে আরোহণের পর দীর্ঘ ৭০ বছরের বেশি সময়ে শাসন করা এই রানির কিন্তু গাড়ির প্রতি ছিল ভীষণ আগ্রহ। ব্রিটেনের রানি হওয়া সত্ত্বেও তিনি অনেক সময় নিজেই গাড়ি চালাতে ভালোবাসতেন। এ ছাড়া, তাঁর নিজের সংগ্রহে ছিল অনেক গাড়ি।
রানি এলিজাবেথ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ড্রাইভিং শেখেন এবং সেনাবাহিনীতে অক্সিলারি সার্ভিস বিভাগে যোগ দেন। সেখানে তাঁকে গাড়ি সার্ভিসিংয়ের প্রশিক্ষণও নিতে হয়। রানি এলিজাবেথ প্রিন্সেস থাকাকালীন ১৯৫০ সালে তাঁর স্বামী প্রিন্স ফিলিপ রোলস রয়েস ফ্যান্টম ফোর গাড়ি নেন। গাড়িটি রানির কাছে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছিল। এমনকি তাঁর মৃত্যুর পর ছেলে ব্রিটেনের বর্তমান রাজা চার্লস থ্রি, তাঁর স্ত্রী ক্যামিলা পার্কারকে নিয়ে সেই রোলস রয়েস গাড়িতে করেই বাকিংহাম প্যালেসে আসেন।
এই গাড়িটিকে ব্রিটিশ রাজপরিবারের মূল্যবান গাড়ি বলে বিবেচনা করা হয়। ল্যান্ড রোভার ছিল রানি এলিজাবেথের প্রিয় গাড়ির ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম। ল্যান্ড রোভার ডিফেন্ডার এসইউভি রানি নিজেই চালাতেন এবং তাঁর সংগ্রহে প্রায় ৩০টি ল্যান্ড রোভার ব্র্যান্ডের গাড়ি ছিল। এ ছাড়া, রেঞ্জ রোভার, জাগুয়ার, ডেইমলারের গাড়িও ছিল রানির এই ৭০ বছরের শাসনকালে।
এ ছাড়া ব্রিটিশ সরকার থেকে স্টেট কার হিসেবে রানিকে ৫টি গাড়ি দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো মূলত কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার কাজে ব্যবহার করতেন রানি। পাঁচটি গাড়ির মধ্যে দুটি ছিল বেন্টলে ব্র্যান্ডের এবং তিনটি রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের। ১৯৬৯ সালে ব্রিটেনের বর্তমান রাজা, তৎকালীন প্রিন্স চার্লসের ২১তম জন্মদিন উপলক্ষে চার্লসকে উপহার দেওয়ার জন্য রানি এলিজাবেথ ও প্রিন্স ফিলিপ কেনেন ১৯৬৫ মডেলের এস্টন মার্টিন ডিবি৬। পরিবেশের কথা ভেবে রাজা চার্লস থ্রি গাড়িটিকে বায়ো ইথানল দিয়ে চালানোর ব্যবস্থা করেন ২০০৮ সালে। তখন থেকে গাড়িটি পরিচিতি পায় ‘পাওয়ারড বাই ওয়াইন অ্যান্ড চিজ’ হিসেবে। কারণ গাড়িটি তখন থেকে চালাতে প্রতি মাইলে প্রয়োজন হতো সাড়ে চার বোতল ওয়াইন!
এ ছাড়া রানির সংগ্রহে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের জন্য ছিল জাগুয়ার এক্সই গাড়ি, যা তিনি নিজে চালিয়ে চার্চে যেতেন।