ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটাকে গতকাল বৃহস্পতিবার ৭৯৮ মিলিয়ন ডলার বা ৭৯ কোটি ৭৭ লাখ ২০ হাজার ইউরো (৮৪০ মিলিয়ন ডলার বা ৮৪ কোটি ডলার) জরিমানা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ফেসবুকের মার্কেটপ্লেসে শ্রেণিবদ্ধ বিজ্ঞাপন পরিষেবায় ব্যবহারকারীদের স্বয়ংক্রিয় প্রবেশাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে একচেটিয়া ব্যবসা সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করায় এই জরিমানা করেছে ইউরোপীয় কমিশন। সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাহী বিভাগ বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যান্টি-ট্রাস্ট বা প্রতিযোগিতা আইন ভঙ্গ করেছে মেটা। ব্যবহারকারীরা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ফেসবুক মার্কেটপ্লেসের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কোম্পানিটির বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অন্য যেসব অনলাইনভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধ বিজ্ঞাপন পরিষেবাদাতা বিজ্ঞাপন দেয়, তাদের ওপর অন্যায্য বাণিজ্যিক শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
মেটা জানিয়েছে যে, তারা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবে। তবে এদিকে দ্রুত ও গঠনমূলকভাবে একটি সমাধান উপস্থাপন করার জন্য কাজ করার কথাও জানায়।
ইউরোপীয় কমিশনের দুই বছর আগে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি মেটাকে অভিযুক্ত করেছিল। কমিশন সেসময় বলেছিল, ফেসবুক মার্কেটপ্লেসকে তার শ্রেণিবদ্ধ বিজ্ঞাপন সেবার সঙ্গে একত্রিত করে অবৈধভাবে অন্যায্য সুবিধা নিচ্ছে।
২০২১ সালে জুনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ফেসবুকের সম্ভাব্য প্রতিযোগিতা বিরোধী আচরণ নিয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে। ২০২২ সালে ডিসেম্বর উদ্বেগ প্রকাশ করে যে, মেটা তার প্রভাবশালী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককে তার অনলাইন শ্রেণিবদ্ধ বিজ্ঞাপন সেবার সঙ্গে যুক্ত করছে।
ফেসবুক ২০১৬ সালে মার্কেটপ্লেস চালু করে এবং এক বছর পর এটি বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশে এই সেবা চালু হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বলছে, মেটা ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ওপর ফেসবুক মার্কেটপ্লেস একটি অবৈধভাবে চাপিয়ে দিচ্ছে।
তবে এর বিপরীতে কোম্পানিটি বলেছে, ‘ফেসবুক ব্যবহারকারীরা তাদের মার্কেটপ্লেসে যুক্ত হবেন কি হবেন না, তা তারাই ঠিক করেন। বাস্তবতা হচ্ছে, মানুষ ফেসবুকের মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করতে চায় বলেই করে। তাঁরা এটি ব্যবহার করতে বাধ্য নয়।’
মেটা আরও বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে বড় প্রতিষ্ঠিত অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোর উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে বলে ইউরোপীয় কমিশন দাবি করে, সেরকম প্রতিদ্বন্দ্বীদের ক্ষতির কোনো প্রমাণ খুঁজে পায়নি তারা।
অ্যান্টি-ট্রাস্ট আইন লঙ্ঘনের জন্য কোম্পানিগুলোর বৈশ্বিক আয়ের ১০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।