Ajker Patrika
হোম > প্রযুক্তি

ওয়্যারলেস সিক্স-জি: ডেটা ট্রান্সফারের ক্ষমতা হবে ৫০০ গুণ বেশি

শাহরিয়ার ফারদিন

ওয়্যারলেস সিক্স-জি: ডেটা ট্রান্সফারের ক্ষমতা হবে ৫০০ গুণ বেশি

ইন্টারনেট পরিষেবার ক্ষেত্রে টু বা থ্রি-জির যুগ শেষ হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে। এখন চলছে ফোর ও ফাইভ-জির যুগ। কিন্তু এরই মধ্যে জাপানের বিজ্ঞানীরা শোনাচ্ছেন সিক্স-জি অর্থাৎ ইন্টারনেট পরিষেবার ষষ্ঠ প্রজন্মের কথা! লিখেছেন শাহরিয়ার ফারদিন

ডেটা ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে চতুর্থ প্রজন্ম বা ফোর-জি সংযোগ নিয়ে খুশি থাকার যুগে সুখবর আসছে দ্রুতই। অন্তত জাপানি বিজ্ঞানীরা ভাবছেন, ষষ্ঠ প্রজন্মের সংযোগ অর্থাৎ সিক্স-জি কানেকটিভিটির কথা। শুনেই মন ভালো হয়ে যাচ্ছে আমাদের।

মন ভালো হওয়ারই কথা। কারণ জাপানি বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ পথে তাঁরা এগিয়েছেন অনেকটাই। ছোট পরিসরে চালিয়েছেন পরীক্ষাও। তার ফলাফলে বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, সিক্স-জি-সমর্থিত একধরনের প্রোটোটাইপ ডিভাইসে ডেটা ট্রান্সফারের গতি ছিল প্রতি সেকেন্ডে ১০০ গিগাবাইট। এ গতি ফাইভ-জি কোনো ডিভাইসে ডেটা ট্রান্সফারের সর্বোচ্চ সক্ষমতার চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আর বাজারে পাওয়া যায় এমন ফাইভ-জি মোবাইল ফোনের ডেটা ট্রান্সফারের সক্ষমতার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশি!

জাপানি বিজ্ঞানীরা আশাবাদী যে বর্তমানে এই সিক্স-জি কানেকটিভিটির রেঞ্জ কম হলেও গবেষণার মাধ্যমে তা শিগগিরই দূর করা সম্ভব হবে। গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন অ্যাসোসিয়েশনের অনুমান, আগামী ৬ বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে ষষ্ঠ প্রজন্মের সেলুলার কানেকটিভিটি বা সিক্স-জি নেটওয়ার্ক বাজারে চলে আসবে।

সাধারণত, নেটফ্লিক্সের দেড়-দুই ঘণ্টাব্যাপী একটি সিনেমার আকার দেড় গিগাবাইটের মতো। বর্তমানে ফাইভ-জি কানেকটিভিটির ক্ষেত্রে এই সিনেমা ট্রান্সফারে যে পরিমাণ সময় লাগে, তার চেয়ে অনেক কম লাগবে সিক্স-জিতে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, প্রতি সেকেন্ডে এ রকম ৮ থেকে ৯টি সিনেমা ট্রান্সফার করা সম্ভব হবে।

সিক্স-জি কানেকটিভিটি নিয়ে যৌথভাবে কাজ করেছে জাপানের রাষ্ট্রায়ত্ত নিপ্পন টেলিগ্রাফ অ্যান্ড টেলিফোন পাবলিক করপোরেশন, দেশটির মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডোকোমো, ইলেকট্রনিক করপোরেশন এনইসি এবং ফুজিৎসু। গবেষকেরা এ ক্ষেত্রে ১০০ গিগাহার্টজ থেকে ৩০০ গিগাহার্টজ পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করেছেন। ফলে একই সময়ে বিপুল পরিমাণ ডেটা ট্রান্সফারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। যেখানে ফাইভ-জি কানেকটিভিটিতে সর্বোচ্চ ব্যান্ডউইথ ৬ গিগাহার্টজ। স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যাচ্ছে, ব্যান্ডউইথ বেশি হওয়ার কারণে সিক্স-জিতে ডেটা ট্রান্সফারের সক্ষমতা অনেক বেশি থাকবে।

এর আগেও জাপানি বিজ্ঞানীরা সিক্স-জি কানেকটিভিটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। তবে এবারের পরীক্ষাকে তুলনামূলক বেশি সফল বলা চলে। এবারের পরীক্ষায় বিজ্ঞানীরা প্রায় ১০০ মিটার দূরে দুটি প্রোটোটাইপ ডিভাইসের মধ্যে প্রতি সেকেন্ডে ১০০ গিগাবাইট হারে ডেটা ট্রান্সফার করেছেন খুবই স্থিতিশীল ও মসৃণভাবে। কিন্তু এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিজ্ঞানীরা যে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন, সেখানে প্রতি সেকেন্ডে ২০ মিটার দূরে ২৪০ গিগাবাইট ডেটা ট্রান্সফার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। 
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই সিক্স-জি কানেকটিভিটির বিষয়টি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। বর্তমানে প্রোটোটাইপ ডিভাইস, নেটওয়ার্ক অবকাঠামোসহ অন্যান্য বাহ্যিক অবকাঠামোর জন্য ব্যয় খুব বেশি হলেও শিগগির তা নাগালের মধ্যে নেমে আসবে।

ফোর-জি থেকে ফাইভ-জি কানেকটিভিটিতে উত্তরণের ফলে আধুনিক বিশ্বের দেশগুলোতে ডেটা ট্রান্সফারসহ অন্যান্য সেলুলার সেবায় দারুণ গতি এসেছে। সিক্স-জি সেই গতিকে আরও বাড়িয়ে দেবে নিঃসন্দেহে। বিশেষ করে হাই রেজল্যুশন ভিডিও, ইমেজ ডাউনলোড-আপলোড, বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় ডিভাইসের মধ্যকার যোগাযোগ ইত্যাদির গতি বৃদ্ধি পাবে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, সিক্স-জির একটি বড় সুবিধা হবে, একই সঙ্গে একাধিক ওয়্যারলেস ডিভাইসকে সংযুক্ত করার ক্ষমতা। আমাদের দেশে অতি জনাকীর্ণ জায়গায় কখনো কখনো মোবাইল ফোনে নেটওয়ার্ক কম পায় বা কখনো কখনো পাওয়াই যায় না। সিক্স-জি নেটওয়ার্কে এই বিষয়টি অনেকটাই কমে যাবে।

এই সিক্স-জি সংযোগের আরেকটি সুবিধা হতে পারে, ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সেবা। এর ফলে কোনো একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কয়েকটি বাড়ি মিলে হয়তো একটি মাত্র ওয়াই-ফাই সংযোগের আওতায় ইন্টারনেট সেবা পাবে। ফলে এখন ঘরে ঘরে কেব্‌ল লাগিয়ে যে ইন্টারনেট সংযোগের চল, তা আর নাও থাকতে পারে। হলোগ্রাফিক কমিউনিকেশন বা সামগ্রিক ত্রিমাত্রিক ভার্চুয়াল যোগাযোগ, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও মিক্সড রিয়েলিটির দুনিয়ায় মানুষের যে অভিজ্ঞতা তা আরও মসৃণ করবে সিক্স-জি। এর কারণ, সিক্স-জি কানেকটিভিটির মূল জায়গাটাই হলো বৃহত্তর ব্যান্ডউইথ।

তবে সিক্স-জি-সমর্থিত ডিভাইস উন্নয়ন, এই কানেকটিভিটির ব্যান্ডউইথ সেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদিতে এখনো যথেষ্ট সময় লাগবে। উন্নত বিশ্বই যেখানে আশা করছে ২০৩০ সাল নাগাদ এটি বাজারে আসতে পারে, সেখানে আমাদের দেশে আসতে কত বছর লাগতে পারে তা সহজেই বোঝা যায়। 

তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট ও লাইভ সায়েন্স

হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হিস্টোরির ব্যাকআপ রাখার উপায়

সবচেয়ে নির্ভুল ঘড়ি বাজারে আনল জাপান, দাম ৩৩ লাখ ডলার

জটিল প্রশ্নের উত্তর দেবে গুগল সার্চের নতুন ‘এআই মোড’

যে কারণে ওপেনএআইয়ের সঙ্গে ৫ বছরের চুক্তি করল অক্সফোর্ড

ডিপফেক ও ভুয়া ক্রিপ্টোর মাধ্যমে প্রতারণা, ৬ হাজার মানুষের ৩৫ মিলিয়ন ডলার চুরি

যুক্তরাজ্যে ডেটা নিরাপত্তা ফিচার বন্ধের আদেশের বিরুদ্ধে অ্যাপলের আপিল

হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট গোপন করবেন যেভাবে

লাইভ লোকেশন শেয়ারসহ নতুন ৪ ফিচার আসছে অ্যান্ড্রয়েডে

সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে ৫২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকি আইন বাতিল চান ট্রাম্প

নতুন চিপের আইপ্যাড এয়ার ও ম্যাজিক কিবোর্ড নিয়ে এল অ্যাপল