মোস্তাফিজ মিঠু, ঢাকা
উদ্ভাবনের দুনিয়ায় বয়স কখনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। দারুণ আইডিয়া দিয়ে পৃথিবী জয় করে নিয়েছে বিভিন্ন বয়সের মানুষ। সেখানে যেমন ৮০ বছর বয়সীরা আছেন, তেমনি আছে কিশোরেরাও। সে রকমই একজন আমাদের তামজিদ রহমান। মাত্র ১৬ বছর বয়সে রক্ত আদান-প্রদানের একটি অ্যাপ তৈরি করেছিল সে। ‘ব্লাড লিংক’ নামের সেই অ্যাপের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালে।
খুব কম সময়ে সাড়া ফেলে ‘ব্লাড লিংক’। সেই সংবাদ দ্রুত পৌঁছে যায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। এরই ধারাবাহিকতায় নেদারল্যান্ডসভিত্তিক কিডস রাইটস ফাউন্ডেশনের আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কারের (আইসিপিপি) ৩০ জনের চূড়ান্ত তালিকায় নাম ওঠে তামজিদের।
তামজিদের আগে এ পুরস্কারের তালিকায় বাংলাদেশ থেকে অনেকে জায়গা করে নিয়েছিলেন। ২০০৫ সালে রোমে অনুষ্ঠিত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীদের এক শীর্ষ সম্মেলন থেকে আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার চালু করে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক ‘কিডস রাইটস’ নামের সংগঠনটি। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়। শিশুদের অধিকার উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় বিশেষ অবদানের জন্য প্রতিবছর দেওয়া হয় আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার। ২০১৩ সালে এ পুরস্কার পেয়েছিলেন মালালা ইউসুফজাই।
ব্লাড লিংক নামের অ্যাপটি কেন তৈরি করেছিলেন তামজিদ—জানিয়েছেন বিস্তারিত। জানিয়েছেন, রক্তের জন্য মানুষের ভোগান্তি তিনি দেখেছেন খুব কাছ থেকে। মানুষের ভোগান্তির সেসব অভিজ্ঞতা তাঁকে অ্যাপটি তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করে। তামজিদ বলেন, ‘সেটির এমন সাফল্যে আমি আনন্দিত। এতে আমাদের অ্যাপ আরও সমাদৃত হবে। আরও বেশি মানুষ এর ব্যবহার সম্পর্কে জানবে। তাতে সবার উপকার হবে।’
স্বেচ্ছায় রক্তদাতা ও গ্রহীতাদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি করে ব্লাড লিংক। এই অ্যাপ সবার জন্য বিনা মূল্যে উন্মুক্ত।
এটি জরুরি পরিস্থিতিতে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত সবার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত পাওয়া সহজ করেছে।
এরই মধ্যে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি সফল রক্তদাতা ও গ্রহীতা এর মাধ্যমে সেবা নিয়েছেন। এ ছাড়া ৫০০ জনের বেশি শিশুর জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে এর মাধ্যমে। ব্লাড লিংকে দেশের প্রায় ৯৫০ জন সক্রিয় রক্তদাতা তালিকাভুক্ত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক এই পুরস্কারের হাত ধরে তামজিদ রহমান এবং তার অ্যাপ ব্লাড লিংক ছড়িয়ে পড়ুক সবার মধ্যে। আরও সহজ হোক স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি।