বিশ্বে বৃহত্তম তামা উৎপাদনকারী দেশ চিলি। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই ধাতব পদার্থটিকেই মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে লাতিন আমেরিকার দেশটি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার একটি ভিডিও প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, জীবাণুনাশক হিসেবে তামা ব্যবহার করছে চিলি। বিশেষ করে শপিংমলগুলোতে কপার ন্যানোপার্টিক্যালে তৈরি জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। এছাড়া এরই মধ্যে কপার আয়ন থ্রেড (তামাযুক্ত বিশেষ সুতা) উদ্ভাবন করেছে স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান। মাস্ক থেকে শুরু করে সোফা বা গাড়ির আসনের কভার তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে এই সুতার কাপড়।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, তামার রয়েছে শক্তিশালী অণুজীব বিধ্বংসী ক্ষমতা। এই ধাতু ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার মতো জীবাণুকে দ্রুত ধ্বংস করতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, সার্স–কোভ-২ ভাইরাস কার্ডবোর্ডের মতো শক্ত জিনিসের পৃষ্ঠে ২৪ ঘণ্টা আর প্লাস্টিক এবং লোহার জিনিসের গায়ে দুই থেকে তিন দিন বেঁচে থাকতে পারে।
করোনাভাইরাস দরজার হাতল, প্লাস্টিক ও লেমিনেটেড ওয়ার্কটপ ও কঠিন বস্তুর ওপর দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে।
কিন্তু তামার কোনো জিনিসে চার ঘণ্টার মধ্যে মারা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের ভাইরোলজিস্ট নিলৎজে ফান ডোরমালেন তার সহকর্মীদের নিয়ে এই গবেষণাটি করেছেন।
শুধু জীবাণুনাশকই নয় তামা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে সুতাও । দ্য কপার কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান এই সুতা তৈরি করছে। করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ার এই সুতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে মাস্ক,হাসপাতালের বেডশিট, তোয়ালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় বস্তু।
কোম্পানিটি নিজেরাই গবেষণা করে তৈরি করেছে এই সুতাটি। এ নিয়ে দ্য কপার কোম্পানির কমার্শিয়াল ম্যানেজার রোচিও ক্যাসিস বলেন, সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব বার্নের গবেষণা বলছে, এই সুতার সংস্পর্শে এলে পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ করোনা ভাইরাস ধ্বংস হয়। দুই ঘণ্টা পর প্রায় ৯৫ শতাংশ ভাইরাস ধ্বংস করে এই তামার সুতা।
তবে করোনা বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তামা কতটুক কার্যকর তা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইনফেকশাস ডিজিসের নির্বাহী কর্মকর্তা উইলিয়াম শ্যাফনার। তিনি বলেন, এটি নিয়ে বলার আগে আমাদের আরও গবেষণা প্রয়োজন। তবে আইডিয়াটা চমৎকার!