হলিউডের ছবি যাঁদের পছন্দ, রবিন উইলিয়ামসের হাসিমাখা চেহারাটা তাঁরা ভুলতে পারবেন না কখনো। বিশেষ করে কমেডি ধাঁচের অভিনয়ের জন্য দর্শকের মন কেড়ে নিয়েছিলেন অস্কার বিজয়ী এই অভিনেতা। আজকের এই দিনে, অর্থাৎ ২০১৪ সালের ১১ আগস্ট নিঃসন্দেহে রবিন উইলিয়ামসের ভক্তদের জন্য কষ্টের এক দিন। কারণ এদিন আত্মহত্যা করেন তিনি।
কৌতুক অভিনেতা হিসেবে রবিন উইলিয়ামসের অসাধারণ প্রতিভা প্রথম সবার নজর কাড়ে গত শতকের ৭০-এর দশকের শেষের দিকে, টিভি শো ‘মর্ক অ্যান্ড মিন্ডি’র মাধ্যমে। এতে ভিনগ্রহের এক প্রাণী হিসেবে দেখা যায় তাঁকে। অর্ক নামের গ্রহ থেকে যে এসেছিল মানুষের আচরণ সম্পর্কে জানতে। এতে রবিন উইলিয়ামসের হাস্য-রসাত্মক নানা কাণ্ড-কীর্তি দর্শকদের আকৃষ্ট করে।
১৯৫১ সালে শিকাগোতে জন্ম নেওয়া এই অভিনেতার বড় পর্দায় অভিষেক ১৯৭৭ সালে, কম বাজেটের কমেডি ছবি কেন আই ডু ইট ‘টিল আই নিড গ্লাসেস’?-এর মাধ্যমে। তারপর ‘ওয়ার্ল্ড একর্ডিং টু গার্প’ (১৯৮২), ‘মস্কো অন দ্য হাডসন’ (১৯৮৪) ও ‘গুড মর্নিং ভিয়েতনাম’-এর (১৯৮৭) মতো চলচ্চিত্র অভিনয় করেন। ‘গুড মর্নিং ভিয়েতনাম’-এর জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে একাডেমি অ্যাওয়ার্ড বা অস্কারের জন্য প্রথম মনোনয়ন পান।
১৯৯২ সালে মুক্তি পাওয়া অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘আলাদিন’-এ জ্বীনের কণ্ঠ দিয়ে আলোচিত হন এই অভিনেতা। ১৯৯৮ সালে ‘গুড উইল হান্টিং’য়ে থেরাপিস্ট চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে অস্কার জেতেন। পরে ‘ওয়ান আওয়ার ফটো’ (২০০২), ‘দ্য নাইট লিসেনার’-এর (২০০৬) মতো চলচ্চিত্র এবং ‘দ্য হ্যাপি ফিট’ (২০০৬-১১) ও ‘নাইট এট দ্য মিউজিয়াম’-এর (২০০৬-১৪) মতো সিরিজগুলোয় অভিনয় করে প্রশংসা পান।
অস্কারের পাশাপাশি এমি, গোল্ডেন গ্লোব ও গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড জেতেন এই অভিনেতা। গৃহহীন মানুষকে সাহায্য করাসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজে অংশ নেন রবিন উইলিয়ামস। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি তিনবার বিয়ে করেন এবং তাঁর তিনটি সন্তান ছিল। জীবনের শেষ দিকে শ্বাসকষ্ট, হার্টের সমস্যা এমনকি পারকিনসন রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয় তাঁকে।
রবিন উইলিয়ামসের মৃত্যুর পর তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ওই সময়কার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, ‘(তিনি) একজন বৈমানিক, একজন চিকিৎসক, একজন জেনি (আলাদিন চলচ্চিত্রের জিন), একজন আয়া, একজন রাষ্ট্রপতি, একজন অধ্যাপক, একজন পিটার প্যান এবং এর মধ্যে সবকিছুই ছিলেন। তবে তিনি ছিলেন তাঁর মতো। ভিনগ্রহের এক প্রাণী হিসেবে যিনি আমাদের জীবনে হাজির হন, কিন্তু যখন শেষ করলেন তখন মানুষের হ্নদয়ের প্রতিটি উপাদান স্পর্শ করে গেছেন।’
সূত্র: হিস্ট্রি ডট কম, বায়োগ্রাফি ডট কম