ধরুন একটি অট্টালিকার ওপরের দিকের কোনো একটি তলায় থাকেন। সকালে ঘুম ভেঙে গেল গরুর হাম্বা হাম্বা ডাকে। সেই সঙ্গে তাজা গোবরের গন্ধে টেকা দায়। এমন একটি অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয় চীনের সিচুয়ান প্রদেশের একটি দালানের বাসিন্দাদের। তাঁরা এক সকালে হঠাৎ করেই আবিষ্কার করলেন অট্টালিকাটির পাঁচ তলায় নতুন ওঠা এক পরিবার তার ঘরের বারান্দাটিতেই গবাদিপশু পালা শুরু করেছে।
ওই কৃষক আগে গ্রামে থাকতেন। শহরে নতুন আসেন তিনি পরিবার নিয়ে। সঙ্গে করে নিয়ে আসেন তাঁর সাতটি বাছুর। আর এগুলোকে তোলেন একেবারে পাঁচ তলার যে ফ্ল্যাটটিতে উঠেছেন, সেটার বারান্দায়। দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সিচুয়ান প্রদেশের এই আবাসিক ভবনের পঞ্চম তলার বারান্দায় গরুর বাচ্চা বা বাছুরগুলোর খাবার খাওয়ার ভিডিও দেখা যায় ডুইনে। টিকটকের এই চীনা সংস্করণে অন্তত ৪০ লাখ বার দেখা হয় ভিডিওটি।
আবাসিক এলাকাটির একজন বাসিন্দা জানান, গবাদিপশুগুলো কেবল এক দিনই ওই ভবনে থাকতে পেরেছিল। তার পরই এদের ডাক আর গোবরের গন্ধে বিরক্ত বাসিন্দারা আবাসন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানায়। পশুগুলোর ভবনে আনার পরদিন, অর্থাৎ ১৪ জুলাই শহর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এগুলোকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে।
তবে ভিডিওটা যাঁরা দেখেন, তাঁদের বেশির ভাগের মন্তব্য রসাত্মক হলেও কেউ কেউ ভিন্ন একটা বিষয়ও নজরে আনেন। তাঁরা বলেন, এখানকার আবাসিক ভবনগুলোর কোনো কোনো বাসিন্দা জীবনের আগের গোটা সময়টাই গ্রামে কাটিয়েছেন। কাজেই সবজি চাষ কিংবা পশু পালনের বিষয়টাই তাঁদের জানা আছে।
যেমন একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, ‘এসব মানুষ গ্রামে তাঁদের জীবনটা কাটিয়েছেন। তাঁরা নিজেদের উঠানে হাঁস-মুরগি পালা বা সবজি চাষ করার বিষয়টির সঙ্গেই অভ্যস্ত।
ভিডি দেখা ডুইন ব্যবহারকারীরা নানা ধরনের মন্তব্য করেন। একজন যেমন বলেন, ‘আমার মনে হয় পশুগুলো কখনো ভাবেনি এমন একটি অট্টালিকায় থাকবে তারা।’
‘হতভাগা বাছুরগুলো, ছোট্ট একটা বারান্দায় গাদাগাদি করে থাকতে হয়েছে এদের।’ আরেকজন বলেন। অপর একজন আবার মজা করে লেখেন, ‘যাক, এটা অন্তত প্রমাণ হলো, দালানটি বেশ শক্তপোক্ত।’
অবশ্য এই আবাসিক এলাকায় এমন ঘটনা একেবারে নতুন নয়। গত জানুয়ারিতে এখানকার কিছু বাসিন্দা অভিযোগ করেন, এই অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের অনেকেই নিজেদের ফ্ল্যাটে মুরগি পালছেন। এগুলোর শব্দে তাঁদের সমস্যা হচ্ছে।
এ ধরনের ঘটনা চীনের অন্য এলাকায়ও ঘটেছে। গত ১৫ জুলাই উত্তর চীনের হেইলংজিয়াং প্রদেশের এক নারী অভিযোগ করেন, বয়স্ক এক প্রতিবেশী তাঁর পশুপালনের অভ্যাস অট্টালিকায় থেকেও ছাড়তে পারেননি। গন্ধে তাঁর এক বছরের শিশুটির ক্ষতি হতে পারে আশঙ্কা করে বাসা বদলাতে বাধ্য হন তিনি।
সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট