হঠাৎ এ ধরনের গাছ দেখে ভাবতে পারেন রং-তুলি নিয়ে একে রাঙিয়ে দিয়েছে নাকি কেউ? কিন্তু রেইনবো ইউক্যালিপটাস নামের এই গাছ বর্ণিল হয়ে ওঠার কারণটা প্রাকৃতিক। কি বিশ্বাস করতে মন চাইছে না? তাহলে পুরো লেখাটা পড়েই দেখুন।
যে অল্প কয়েক ধরনের ইউক্যালিপটাসগাছ অস্ট্রেলিয়ার বাইরেও পাওয়া যায়, তার একটি রেইনবো বা রংধনু ইউক্যালিপটাস। এটি ইউক্যালিপটাসের একমাত্র জাত যেটি প্রাকৃতিকভাবে উত্তর গোলার্ধে পাওয়া যায়। এরা মূলত পাপুয়া নিউগিনি, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের স্থানীয় গাছ। তবে এখন এই গাছটি পৃথিবীর নানা জায়গায় চাষ করা হয়।
স্বাভাবিকভাবেই প্রথম দেখায় বিশ্বাস করতে মন চাইবে না এই রং প্রাকৃতিক। ‘গাছের ছাল-বাকলে এমন রং করলে কে?’ অনেকের মনেই এ প্রশ্নটাই উদয় হয়। সত্যি গোলাপি, সবুজ, কমলা, লালসহ নানা রঙের বাহার দেখে চোখ কপালে উঠবে যে কারও।
এই গাছের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাপার হলো, এর বাকল সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রং পরিবর্তন করে। বলা চলে, এটিই গাছটিকে অনন্য করে তুলেছে। রেইনবো ইউক্যালিপটাস বা রংধনু ইউক্যালিপটাস বৈজ্ঞানিক নাম ইউক্যালিপটাস ডিগ্লুপ্তা। বছরজুড়ে এই গাছের ছাল উঠতে থাকে। নিচের গাঢ় সবুজরঙা ছাল যত পরিপক্ব হয়, রং বদলাতে থাকে।
‘এই প্রক্রিয়াটি অস্বাভাবিক নয়, বনের লাল গাম, ডোরাকাটা গামসহ আরও বিভিন্ন গাছে এটি ঘটে। শুধু রঙের পরিবর্তনগুলো ইউক্যালিপটাসের বেলায় বাইরের দিকে হওয়ায় ভালোভাবে চোখে পড়ে।’ বলেন ব্রেট।
পরিষ্কারভাবে বললে, পৃথিবীর অনেক দেশেই এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তবে প্রাকৃতিকভাবে এটি জন্মায় যেখানে সেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বনভূমিতে বৃক্ষ উজাড় আর জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েছে গাছটি।
মিন্ডানাও গাম বা রেইনবো গাম নামেও পরিচিত রেইনবো ইউক্যালিপটাস। এর উচ্চ বাণিজ্যিক মূল্য রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে এর আশ্চর্য সুন্দর রং কোনো কাজেই আসে না। এর বাকলের পাতলা স্তরগুলো পাল্পউডের একটি চমৎকার উৎস, যা সাদা কাগজের প্রধান উপাদান। তাই এটি পাল্পউড বাগানে একটি প্রভাবশালী প্রজাতি। কারণ, এরা প্রাকৃতিকভাবে কীটপতঙ্গ ও রোগ প্রতিরোধী। একই সঙ্গে অবিশ্বাস্য রকম দ্রুত বর্ধনশীল একটি গাছ, বছরে তিন ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এটি।
সূত্র: অস্ট্রেলিয়ান জিওগ্রাফিক, অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, ওয়ান আর্থ ডট অরগ