অনলাইন ডেস্ক
বিড়াল এখন মানুষের সবচেয়ে পছন্দের পোষা প্রাণীগুলোর একটি। তবে সব সময়ই কিন্তু বিড়ালকে এতটা আদর-যত্ন করত না মানুষ। বিশেষ করে পাশ্চাত্যে বিড়ালকে পোষা প্রাণী হিসেবে জনপ্রিয় করে তুলতে দারুণ ভূমিকা রাখে একটি বিড়াল প্রদর্শনী। ১৮৭১ সালের এই দিনে, অর্থাৎ ১৩ জুলাই যুক্তরাজ্যের লন্ডনে হয় প্রদর্শনীটি।
ভিক্টোরিয়ান যুগের ব্রিটিশদের কাছে বিড়ালের প্রয়োজনীয়তা ছিল মূলত ইঁদুরের মতো ক্ষতিকর প্রাণী দমনের জন্য। তবে ১৮৭১ সালের ১৩ জুলাই ক্রিস্টাল প্যালেসের সেই বিড়াল প্রদর্শনীর পর শুধু ইঁদুর শিকারি নয়, বিড়ালও যে আদর-যত্ন করে পোষার মতো একটি প্রাণী হতে পারে, অভিজাতদের মধ্যে এমন একটি ধারণা দিতে সাহায্য করে।
১৮৭১ সালের এই বিড়াল প্রদর্শনী আয়োজনের পরিকল্পনা লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের সুপারিনটেনডেন্ট ফ্রেড উইলসনের। ওই প্রদর্শনীতে ৬৫টির মতো বিড়ালকে উপস্থিত করা হয়। এই বিড়াল প্রদর্শনীকে এ ধরনের প্রথম কাজ হিসেবে ধরা হলেও বিড়ালকে পোষা প্রাণী হিসেবে জনপ্রিয় করে তুলতে যে মানুষটি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখেন, তিনি হ্যারিসন উইলিয়াম উয়্যার।
সুশৃঙ্খল বিড়াল প্রদর্শনীর বিষয়টি প্রথম শুরু করেন উয়্যার। গবাদি পশু, ঘোড়া, খাঁচার পাখি এবং ওই সময় সদ্য শুরু হওয়ার কুকুরের প্রদর্শনীর মতো লাইন ধরে হাঁটা বা দৌড়ানোসহ নানা নিয়মকানুনের প্রথম প্রচলন ঘটান উয়্যারই। শুধু তাই নয়, পরবর্তীসময়ে বিড়ালকে জনপ্রিয় করে তুলতে মূল ভূমিকা ছিল তাঁরই। এখনো তাই তাঁকে বিবেচনা করা হয় ‘বিড়ালপ্রেমের জনক’ হিসেবে।
১৮৮৭ সালে ওয়ের প্রতিষ্ঠা করেন ন্যাশনাল কেট ক্লাব। তাঁর এই ন্যাশনাল কেট ক্লাবের প্রথম প্রদর্শনীতে উপস্থিতি ছিল ৩২০টি বিড়ালের।
একপর্যায়ে বিড়াল প্রদর্শনী জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে যায়। ১৮৯৫ সালে জন্ম নেওয়া ফুলমার জাইদা এমন ১৫০টি বিড়াল প্রদর্শনীতে প্রথম হয়। এদিকে ১৮৯৫ সালে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে প্রথম ন্যাশনাল ক্যাট শো অনুষ্ঠিত হয়।
আর এভাবেই শুধু ইঁদুর শিকারি প্রাণী নয়, আদুরে পোষা প্রাণী হিসেবেও নিজের আসন পাকাপোক্ত করে নিল বিড়ালেরা।
সূত্র: ডেইলি মেইল, কেট ও পিডিয়া, গ্রেট কেট, হ্যারিসন ওয়্যার ডট কম