ছোট্ট একটি দ্বীপ। সেখানে কেবল একটি বাড়িরই জায়গা হয়। কেমন অবিশ্বাস্য শোনালেও এমন দ্বীপ সত্যি আছে। এর দেখা পেতে হলে আপনাকে যেতে হবে মার্কিন মুলুকে।
‘জাস্ট এনাফ রুম আইল্যান্ড’ নামের খুদে এই দ্বীপের আকার একটি টেনিস কোর্ট থেকে সামান্য বড়। অনেকেই একে বিবেচনা করেন মানুষের বাস আছে এমন সবচেয়ে ক্ষুদ্র দ্বীপ হিসেবে।
৩ হাজার ৩০০ বর্গফুটের (এক একরের ১৩ ভাগের ১ ভাগ) খুদে দ্বীপটিতে কেবল একটি বাড়ি, একটি গাছ, কিছু ঝোপঝাড় আর গোটা দুয়েক বেঞ্চ বা চেয়ার আছে। হাব আইল্যান্ড নামেও পরিচিত এটি।
যখন কোনো ভূখণ্ড বেশি ছোট হয়ে যায়, তখন কখনো কখনো তাদের দ্বীপ হিসেবে বিবেচনাতেই আনা কঠিন। তাই কিছু জায়গায় কোন ভূখণ্ডগুলোকে দ্বীপ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে, তার নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ড রয়েছে।
জাস্ট রুম এনাফ আইল্যান্ড যে এলাকায় অবস্থিত, সেখানে একটি দ্বীপ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য, জমিটি অবশ্যই এক বর্গফুটের চেয়ে বড় হতে হবে। এ ছাড়া জায়গাটি সারা বছর পানির স্তরের ওপরে থাকতে হবে এবং এতে কমপক্ষে একটি গাছ থাকতে হবে। জাস্ট রুম এনাফ আইল্যান্ড এই মানদণ্ডগুলো পূরণ করে, কিন্তু এটি যতটা না দ্বীপ, তার চেয়ে বেশি একটি বাড়ি বা ঘর।
এবার বরং দ্বীপটির মালিক কারা, সে সম্পর্কে দু-চার কথা বলে নেওয়া যাক। ১৯৫০-এর দশকে সাইজল্যান্ড নামের একটি পরিবার হাব আইল্যান্ড কিনে নেয়। ছোট্ট দ্বীপে একটি বাড়ি বানায় তারা। একপাশে বেঞ্চ আর চেয়ার পাতা হয়। দ্বীপে একটি গাছও লাগানো হয়। দ্বীপটির নতুন নাম দিল পরিবারটি—‘জাস্ট রুম এনাফ আইল্যান্ড’। এমন একটি দ্বীপের জন্য এই নাম যে যুক্তিযুক্ত, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না।
তবে ব্যস্ত নগর থেকে দূরে প্রকৃতির মধ্যে কোলাহলমুক্ত পরিবেশে ছুটির দিনগুলো কাটানোর যে পরিকল্পনা সাইজল্যান্ড পরিবার করেছিল, সেটা খুব একটা কাজে আসেনি। তাদের ‘দ্বীপের আকারের কটেজ’ বা ‘কটেজ আকারের দ্বীপ’ দ্রুতই সেন্ট লরেন্স নদীতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠল। অর্থাৎ শান্ত পরিবেশে থাকাটা আর হলো না তাদের।
সাইজল্যান্ড পরিবার জায়গাটি কেনার পর পেরিয়ে গেছে বেশ কয়েক দশক। তবে পর্যটকদের কাছে ছোট্ট এক দ্বীপ আর এর প্রায় গোটা আয়তনজুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা বাড়িটির আকর্ষণ কমেনি বিন্দুমাত্র।
অবশ্য জাস্ট রুম এনাফ আইল্যান্ডসহ থাউজ্যান্ড আইল্যান্ডসের অনেক দ্বীপেই পর্যটকদের প্রবেশের অনুমতি নেই। অবশ্য দ্বীপে উঠতে না পারলে কী হবে, নৌকায় চেপে কাছ থেকে দেখতে তো আর কেউ বাধা দিতে পারে না তাদের।
ব্যতিক্রমও আছে। এমনই একটি জায়গা এখানকার অক্সিডেন্ট আইল্যান্ডের ‘আইল্যান্ড বোট হাউস’। ১৯০০ সাল থেকে একই পরিবারের মালিকানাধীন আছে এটি। দুই কামরার হোটেলটিতে নদীর দিকে মুখ করা একটি প্রশস্ত ডেকও রয়েছে।
কাজেই পাঠক যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে গেলে সেন্ট লরেন্স নদী ও বিখ্যাত থাউজ্যান্ড আইল্যান্ডস ভ্রমণের সুযোগ হাতছাড়া করবেন না আশা করি। বিশেষ করে এক বাড়িময় একটি দ্বীপ দেখাটা নিশ্চয় অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা হবে। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে একটি রাত কাটাতে চাইলে তো ‘আইল্যান্ড বোট হাউস’ আছেই।
সূত্র: দ্য সান, কনডে নাস্ট ট্রাভেলার, এটলাস অবসকিউরা সিডনি মর্নিং হেরাল্ড