স্কটিশ এক নারী ২৫ বছর ধরে খেঁকশিয়ালের একটি পরিবারের সদস্যদের খাবার খাওয়ান। তিনি ডাক দিলেই জঙ্গলে নিজেদের গুহার আবাস থেকে তাঁর বাগানে চলে আসে শিয়ালগুলো। মজার ঘটনা, এই খেঁকশিয়ালদের খাদ্যতালিকায় থাকে সসেজ রোল, পিৎজাসহ চীনা রেস্তোরাঁর নানা ধরনের খাবার।
স্কটল্যান্ডের সাউথ ল্যাংকাশায়ারের ইস্ট কিলব্রাইডে শ্যারন হিউজ নামের এই নারীর বাস। নিজের বাগানে শিয়ালগুলোকে সসেজ রোল খাওয়ানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়ার পর ইন্টারনেট দুনিয়ায় রীতিমতো সাড়া পড়ে গেছে শ্যারন ও তাঁর শিয়ালগুলোকে নিয়ে। ইন্টারনেট ও টিকটক মিলিয়ে ৯ কোটি বার দেখা হয়েছে শিয়ালকে নিয়ে করা ভিডিওগুলো। শ্যারনের কাছে খাবার খেতে আসা শিয়ালের সংখ্যা এখন আট, আর এগুলো একই পরিবারের সদস্য।
ঘটনার শুরু ২৫ বছর আগে। তখন এক জোড়া খেঁকশিয়াল শ্যারনদের বাগানে হাজির হয়। এদের খাওয়ার জন্য কিছু একটা ছুড়ে দিতেন তিনি। আরও কিছু পাওয়ার জন্য পরদিন আবার ফিরে আসে। এভাবেই ধীরে ধীরে শিয়ালদের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে তাঁর। শ্যারন ২০২০ সালে তাঁর স্বামী বিলকে হারান। ৫৭ বছর বয়সে ক্যানসারে মারা যান বিল।
শিয়ালদের খাবারের মধ্যে আছে পরিবারের সদস্যদের খাওয়ার পর রয়ে যাওয়া পিৎজা, ডিম, চীনা রেস্তোরাঁর খাবার আর মুরগির রান। বছরে কেবল দুই মাস প্রিয় শিয়ালগুলোর দেখা পান না শ্যারন, সেটা তাদের মেটিং বা মিলনের সময়।
নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে শিয়ালগুলোকে সসেজ, সসেজ রোলসহ বিভিন্ন খাবার খেতে দেন শ্যারন। খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি এদের চিকিৎসার কোনো প্রয়োজন আছে কি না, সেদিকেও কড়া নজর থাকে এই নারীর। একটি গাড়ির ধাক্কায় আহত হওয়ার পর এরশায়ার নামের একটি শিয়ালকে বন্যপ্রাণীর একটি অভয়ারণ্যে নিয়ে যান। যদিও এটাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। যদি দেখেন কোনো জন্তু খোঁড়াচ্ছে কিংবা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে,তখন দ্রুত ব্যাবস্থা নেন শ্যারন। প্রয়োজন হলে এদের সসেজের মধ্যে বিশেষ ধরনের ব্যথানাশক দিয়ে দেন।
আটটি খেঁকশিয়ালের সবগুলোর নাম আছে, আর এগুলোকে নাম ধরে ডাকলে সারা দেয়। টুইস্টেড, লিটল টেড, চার্লস ও ডাইসন এদের কয়েকটির নাম।
শ্যারন জানান, খেঁকশিয়ালগুলো খুব বন্ধুভাবাপন্ন। কাছের জঙ্গলেই নিজেদের গর্তে প্রাণীগুলোর বাস। শ্যারন চিৎকার করে তাদের ডাকলেই খেতে তাঁর বাগানে হাজির হয় এরা।
শ্যারনের তিনটি বিড়াল আর একটি কুকুর আছে। তবে এদের সঙ্গে শিয়ালগুলোর ঝামেলা বাধে না। তিনি জানান, শিয়ালেরা এতই অনুগত যে খাবারের জন্য কখনো কখনো বাড়ির পেছনের দরজা পর্যন্ত চলে আসে।
সূত্র: মিরর, অডিটি সেন্ট্রাল, বোরড পান্ডা