অনলাইন ডেস্ক
ইঁদুরের বিরুদ্ধে গাঁজা খাওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভারতের পুলিশ। দেশটির উত্তর প্রদেশ রাজ্যের পুলিশ বলেছে, তারা ডিলারদের কাছ থেকে প্রায় ২০০ কেজি গাঁজা জব্দ করে থানায় রেখেছিল, কিন্তু সেই সব গাঁজা খেয়ে ফেলেছে ইঁদুর!
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, মাদক চোরাচালানের তিনটি মামলায় উত্তর প্রদেশের আদালত পুলিশকে তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে বলেছিলেন। তখন পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ইঁদুর গাঁজাগুলো খেয়ে ফেলেছে।
বিচারক সঞ্জয় চৌধুরী এক আদেশে বলেছেন, ‘আদালত যখন পুলিশকে জব্দকৃত মাদকটি প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করতে বলেছিলেন, তখন পুলিশ বলেছে, ১৯৫ কেজি গাঁজা ইঁদুর খেয়ে ফেলেছ। এ ছাড়া ৩৮৬ কেজি মাদকের সঙ্গে জড়িত অপর একটি মামলার প্রতিবেদনেও পুলিশ বলেছে, কিছু গাঁজা ইঁদুর খেয়ে ফেলেছে।’
সঞ্জয় চৌধুরী আরও বলেছেন, ‘পুলিশের জব্দ করা প্রায় ৭০০ কেজি গাঁজা মথুরা জেলার থানায় রাখা ছিল। সেখানে অনেক ইঁদুরও ছিল। কিন্তু ইঁদুরগুলো খুব ছোট হওয়ায় তাদের প্রতিহত করার কোনো দক্ষতা পুলিশের ছিল না। ইঁদুরেরা ছোট প্রাণী এবং তাদের পুলিশের ভয় নেই। তাদের হাত থেকে মাদক রক্ষা করা কঠিন।’
তবে মথুরা জেলার একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা এমপি সিং সাংবাদিকদের বলেছেন, তাঁর আশপাশের থানাগুলোতে সংরক্ষিত কিছু গাঁজা ভারী বৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। ইঁদুরেরা সেগুলো খেয়ে ফেলেনি।
ইঁদুরের বিরুদ্ধে মাদক সেবনসহ নানা অভিযোগ এটাই প্রথম নয়, এর আগে ২০১৭ সালে ভারতের বিহার রাজ্যের পুলিশ বলেছিল, তাদের হাজার হাজার লিটার জব্দ করা অ্যালকোহল ইঁদুর খেয়ে ফেলেছে। এ ছাড়া ২০১৮ সালে আসাম রাজ্যে একটি ত্রুটিপূর্ণ এটিএম মেশিন ঠিক করতে গিয়ে প্রযুক্তিবিদরা দেখতে পান, সেখানে ১২ লাখ রুপির সমপরিমাণ নোট ছেঁড়া। তাঁরা ধারণা করেছিলেন, ইঁদুর এসব নোট কেটে ফেলেছে।
ভারত ছাড়াও আর্জেন্টিনায় একবার এমন ঘটনা ঘটেছিল। ২০১৮ সালে আর্জেন্টিনায় পুলিশের গুদাম থেকে আধা টন গাঁজা গায়েব হওয়ার জন্য ইঁদুরকে দায়ী করা হয়েছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, ‘ইঁদুর যদি এত বিপুল পরিমাণ গাঁজা খেয়ে ফেলত, তবে সেখানে প্রচুর মরা ইঁদুর পাওয়া যেত। যেহেতু গুদামে ইঁদুরের মৃতদেহ পাওয়া যায়নি, সুতরাং পুলিশের অভিযোগ বিশ্বাসযোগ্য নয়।’ এ ঘটনার পর আটজন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছিল আর্জেন্টিনা প্রশাসন।
২০১৯ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, গবেষণাগারে ইঁদুরকে গাঁজাযুক্ত আটা খেতে দেওয়ার পর দেখা গেছে, তারা কম সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং তাদের শরীরের তাপমাত্রাও কমে যায়।